ড্রোন কি পারবে শব্দদৈত্য রুখতে

শব্দবাজি রুখতে কালীপুজোর রাতে মাটিতে-আকাশে নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু তাতেও কি কান ঝালাপালা হওয়া আটকাবে শহরবাসীর? বুধবার কালীপুজোর আগের রাতে এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে লালবাজারের অন্দরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০১
Share:

শব্দবাজি রুখতে কালীপুজোর রাতে মাটিতে-আকাশে নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু তাতেও কি কান ঝালাপালা হওয়া আটকাবে শহরবাসীর? বুধবার কালীপুজোর আগের রাতে এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে লালবাজারের অন্দরে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, শব্দবাজি রুখতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই অটো ও মোটরবাইকে চেপে শহরের পথে টহল দেবেন পুলিশকর্মীরা। আকাশপথে বহুতলের ছাদে নজরদারি চালাবে লালবাজারের উড়ুক্কু যান (ড্রোন)। পুলিশ সূত্রের খবর, উড়ুক্কু যানে লাগানো ক্যামেরার ছবি সরাসরি দেখবে কন্ট্রোল রুম। বাজি ফাটানো সন্দেহজনক মনে হলেই সেখানে যাবে টহলদার পুলিশ। বস্তুত, গত বছরও কালীপুজোর রাতে এই যান ব্যবহার করা হয়েছিল। এ বছর আরও পরিকল্পিত ভাবে এই যান ব্যবহার করা হবে।” মন্তব্য এক পুলিশকর্তার। পুলিশের একাংশ অবশ্য এই পদ্ধতির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেন?

লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন বহুতলের ছাদে শব্দবাজি ফাটানো হয়। সেই খবর পেয়ে গত বছর বহু জায়গাতেই হানা দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু একতলার মূল ফটকে তালা ঝোলানো থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই উপরে উঠতে পারেননি পুলিশকর্মীরা। কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার অভিজ্ঞতা, গত বছর কালীপুজোর রাতে মধ্য কলকাতার বহুতল আবাসনের ছাদে শব্দবাজি ফাটানো হচ্ছিল। কিন্তু মূল ফটকে তালা। নিরাপত্তারক্ষীকে ধমকে তালা খোলান ওই অফিসার। তার পরে দল নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে বারো তলার ছাদে পৌঁছে দেখেন, কেউ কোথাও নেই। সব ফ্ল্যাটেই ভিতর থেকে ছিটকিনি বন্ধ। “আমরা সিঁড়ি দিয়ে ওঠার আগেই সবাই ছাদ থেকে নেমে গিয়েছিল।”মন্তব্য ওই পুলিশকর্তার।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের আর এক কর্তা বলছেন, উড়ুক্কু যানে তো শব্দগ্রহণের ব্যবস্থা নেই। বহু ক্ষেত্রে সন্দেহজনক বাজির খবর পেয়ে হানা দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, নিরীহ বাজিই ফাটাচ্ছেন ওই নাগরিকেরা।

কালীপুজোর রাতে শহরে শব্দবাজি রুখতে বিশেষ কন্ট্রোল রুম (২২১৪-২১২১) খুলেছে লালবাজার। এ ছাড়াও, ২২১৪-৩২৩০ নম্বরেও অভিযোগ জানানো যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শব্দবাজি রুখতে বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার সারা দিন-রাত সেই কন্ট্রোল রুম (১৮০০-৩৪৫৩৩৯০ অথবা ২৩৩৫-৮২১২, ২৩৩৫-৩১৯৩) খোলা থাকবে। পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কান্তি দত্ত বলেন, “ফোন পেলে সংশ্লিষ্ট থানা এবং পর্ষদের টহলদার দল ব্যবস্থা নেবে।”

অনেকেই অবশ্য বলছেন, বহুতলগুলির ছাদে বাজি ফাটানো রুখতে প্রতি বছরই উদ্যোগী হয় পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু তাতে কতটা লাভ হয়, তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গিয়েছে। শহরের এক বাসিন্দা বলেন, “প্রতি বছরই কালীপুজোর রাতে বাজির শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। কত আর ফোন করে পুলিশ ডাকব!” এই সমস্যা মেনে নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারাও। তাঁরা বলছেন, নাগরিকেরা শব্দবাজি নিয়ে সচেতন না হলে হাজারো আইন করেও এই সমস্যার সমাধান হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন