ধুঁকছে মেট্রো পরিষেবা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ধুঁকছে মেট্রো। নন-এসি রেকগুলি বয়সের ভারে ‘প্রবীণ’ তকমা পেলেও, যাত্রীর বোঝা নিয়ে ছুটতে হচ্ছে।
সিংহভাগ এসি রেকে ইতিমধ্যে বেশকিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে। রেকগুলি থেকে কখনও ধোঁয়া বেরচ্ছে, কখনও চাকা ঘুরছে না। কখনও খুলছে নাদরজা। তবু মেট্রো চলছে।
বেশ কয়েকটি নতুন এসি রেক আনার ইচ্ছা থাকলেও, বাস্তবে সেই পরিকল্পনা কার্যকর হচ্ছে না। বছরখানেক আগে চেন্নাই থেকে ২টি এসি রেক আনা হলেও, সেগুলিকে নামানো যায়নি। ট্রায়াল রানেই ‘ফেল’! যাত্রা শুরুর আগে ধরা পড়েছে ত্রুটি। এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে হিমশিম থেকে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন: মেট্রোয় যান্ত্রিক বিভ্রাট, ট্রেনের ভিতর আটকে যাত্রীরা, পরে উদ্ধার
আরও পড়ুন: রহস্যময় লাল কৌটো ঘিরে বোমাতঙ্ক, রবীন্দ্র সদন স্টেশনে বম্ব স্কোয়াড
আর তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে যাত্রীদের। অফিসের ব্যস্ত সময়েই হোক বা রাতের দিকে, কখন যে মেট্রো মুখ খুবড়ে পড়বে কেউ বলতে পারছে না। যাত্রীরা মজা করে বলছেন, এ যেন পাতাল পথে যন্ত্রণা-যাত্রা!
প্রতিদিন মেট্রোতে গড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। দিনে তিনশো ট্রেন চলাচল করে কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া স্টেশনের মধ্যে।
মেট্রো সূত্রে খবর, বছরের শেষের দিকে ‘চেন্নাইয়ের ইন্ডিয়ান কোচ ফ্যাক্টরি’ থেকে প্রথম এবং দ্বিতীয় এসি রেক কলকাতায় আনা হয়। একাধিকবার ট্রায়াল রান হয়েছে। সম্প্রতি তৃতীয় এসি রেকও এসে গিয়েছে। সেটিও পড়ে রয়েছে। উদ্বেগের বিষয়, নন এসি রেকগুলির মধ্যে বেশিরভাগই ‘মৃতপ্রায়’। এখনও পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো ভারতীয় রেলের অধীন রয়েছে।সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও সরকারি ‘শীলমোহর’ পেতে অনেক সময় দেরি হয়ে যাচ্ছে, বলেও মনে করছেন মেট্রো আধিকারিকদের একাংশ। তাদের মত, মেট্রোর সঙ্গে সাধারণ রেল পরিচালনার ক্ষেত্রে বিস্তর ফারাক রয়েছে। আরও দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সব দিক নজর রাখা হচ্ছে বলেই দাবি করেছেন মেট্রো কর্তারা।
কলকাতায় ২০০৯ সালে প্রথম এসি রেক আসে। এখন কলকাতায় ১৩টি এসি রেক রয়েছে। আর নন এসি ১৮টি। তার মধ্যে ১১টি ধীরে ধীরে বদলে ফেলা হবে।কিন্তু নতুন করে কোনও রেক না আসায় সেগুলিও মেরামত করেই চালানো হচ্ছে। তার জেরে মাঝেমধ্যে বিগড়ে যাচ্ছে রেকগুলি।
কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া— মেট্রোর ‘নাস্তানাবুদ’ অবস্থা হলেও, জুনে সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্টে যাত্রী পরিষেবায় কোনও ‘ত্রুটি’ রাখা হচ্ছে না। এই শহরে চলতে দেখা যাবে চালকবিহীন মেট্রো। দিল্লির পর কলকাতায় এই ধরনের পরিষেবা আসতে চলেছে। ট্রায়াল রানের জন্য এসে গিয়েছে সেই কোচগুলিও।