সাজগোজ: কার্নিভালের প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। রবিবার, রেড রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
গত দু’দিন বিসর্জনের পর্ব দেখে প্রশাসনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট ছিলেন পরিবেশকর্মীরা। তৃতীয় দিনেও একই ভাবে সেই ধারা বজায় থাকল। রবিবার বিকেলেও ঘাটগুলি ঘুরে দেখা গেল, বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই ক্রেনে কাঠামো তুলে আনা হচ্ছে। পরে তা লরি করে নিয়ে ধাপায় ফেলা হচ্ছে। পুজোর ফুল, পাতা যাতে গঙ্গায় না পড়ে সে জন্য প্রতিমা বিসর্জনের আগেই তা পাড়ের বিশেষ জায়গায় রাখছেন পুজো কমিটির লোকজন।
কলকাতার গঙ্গার ঘাট, পুকুর ও জলাশয়ে শুক্রবার থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, সেই সব জায়গা মিলিয়ে শনিবার প্রায় ৩৫০টি প্রতিমা এবং রবিবার রাত পর্যন্ত এক হাজারটি প্রতিমা বিসর্জন হয়ে গিয়েছে। আজ, সোমবার ও আগামীকাল প্রশাসনের তরফে শহরের প্রতিমা বিসর্জনের জন্য বিভিন্ন ঘাটে ব্যবস্থা থাকছে। রেড রোডে কার্নিভালের অংশ নেওয়া ৭৫টি প্রতিমা আগামিকাল বাজেকদমতলা ঘাট ও জাজেস ঘাটে বিসর্জন হবে।
প্রতি বছরই গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন পর্ব নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পরিবেশকর্মীদের ক্ষোভ থাকে। এ বার অবশ্য ব্যতিক্রম। রবিবার দুপুর থেকে বাজেকদমতলা ঘাটে ঠায় দাঁড়িয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত গঙ্গা থেকে কাঠামো তোলার দৃশ্য দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই প্রতিমা বিসর্জন করছে প্রশাসন, এটাই প্রতি বছর মডেল হওয়া উচিত, এমনই মত তাঁর। এ জন্য প্রশাসনকে দরাজ হাতে নম্বরও দিচ্ছেন তিনি।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার বলছেন, ‘‘এ বছর অন্যান্য বারের তুলনায় ক্রেনের সংখ্যা ও লোকবল বাড়ানো হয়েছে। শুধু বাজেকদমতলা ঘাটেই চারটি ক্রেন রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নিমতলা, জাজেস ঘাটেও ক্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, জঞ্জাল অপসারণ ও উদ্যান বিভাগের কর্মীরাও এ কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। এ সবই অন্য বারের তুলনায় বিসর্জন সুষ্ঠু হওয়ার কারণ বলে জানাচ্ছেন পুরসভার আধিকারিকেরা। তবে এর পাশাপাশি রয়েছে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা।
রবিবার বিকেলে নিমতলা ঘাটে বার্জের নীচ থেকে উদ্ধার হয় সৌরভ মিত্র নামে এক ব্যক্তির দেহ। শুক্রবার হাওড়ার ছাতুবাবুর ঘাট থেকে তিনি তলিয়ে গিয়েছিলেন। দেহ উদ্ধারের জেরে কিছু ক্ষণের জন্য বিসর্জন পর্ব স্থগিত রাখা হয়। পরে পুলিশ দেহটি তুলে নিয়ে গেলে ফের বিসর্জন শুরু হয়।