উৎসব শেষ, বিসর্জন শুরু, বর্ষাও বিদায় নেওয়ার পথে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৯
Share:

আবার এসো: দশমীতে বিসর্জনের আগে প্রতিমা-বরণ। মঙ্গলবার জোড়াসাঁকোর দাঁ বাড়িতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

উৎসব শেষ। মঙ্গলবার দুপুর থেকে কড়া নিরাপত্তায় শুরু হল বিসর্জন।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন কিছু বারোয়ারি পুজো এবং মূলত বাড়ির পুজো বা আবাসনের পুজোরই বিসর্জন হয়েছে বেশি। কলকাতার বিভিন্ন বড় পুজোর প্রতিমা রয়ে গিয়েছে। দশমীর বিকেলেও অনেকে ঠাকুর দর্শনে হাজির হয়েছেন। বেশ কিছু পুজোকে রেড রোডে বিসর্জন কার্নিভালে নির্বাচিত করা হয়েছে। সেগুলি আরও কয়েক দিন দেখার সুযোগ থাকবে।

এ দিন কলকাতার বাবুঘাট, নিমতলা ঘাট, বাগবাজার ঘাট, বাজে কদমতলা ঘাট, রানি রাসমণি ঘাট-সহ সমস্ত ঘাটেই বিসর্জনের জন্য যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। বেশির ভাগ ঘাট থেকেই ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়। বিকেল থেকে ঘাটগুলি ঢাকের আওয়াজে মুখর হয়ে ওঠে। বিষাদের মধ্যেই প্রায় সকলের মুখে একই কথা, ‘‘আসছে বছর আবার হবে।’’

Advertisement

এ দিন দুপুর থেকে বিভিন্ন ঘাটে টহল দিতে শুরু করেন কলকাতা পুলিশের কয়েক জন কর্তা। বিকেলে বাজে কদমতলা ঘাট-সহ বেশ কয়েকটা ঘাট পরির্দশন করতে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বোটে করে ঘাটগুলির অবস্থা দেখেন। কথা বলেন পুলিশ কর্তা ও পুর আধিকারিকদের সঙ্গে। পুর অফিসারদের নির্দেশ দেন, পুজো কমিটি বিসর্জন করতে এসে যাতে কোনও অসুবিধায় না-পড়ে তা দেখতে হবে। এ দিন দুপুরে নিমতলা ঘাট, বাগবাজার ঘাট, কাশিপুর ঘাটে পরিদর্শন করেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘একাদশী থেকে বেশি প্রতিমা ঘাটগুলোতে আসবে। জলে কোনও ভাবেই কাঠামো যেন না-থাকে তা দেখতে হবে। প্রয়োজনে কাঠামো বার্জে তুলে ট্রাকে করে ধাপার মাঠে পাঠানো হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, প্রায় প্রতিটি ঘাটেই আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য ক্রেন, বার্জ, পে লোডারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটা ঘাটেই রাখা হয়েছে ফুল বেলপাতা, মালা ফেলার জন্য বড় বড় ড্রাম। ঘাটগুলোতে নজরজারি চালাতে তৈরি হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এ ছাড়াও রয়েছে বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনী। আছেন ডুবুরি ও পুরসভার কর্মীরাও। প্রতি ঘাটেই পর্যাপ্ত কুলির ব্যবস্থা থাকছে। কুলিরাই ট্রাক থেকে প্রতিমা নামিয়ে ঘাটে নিয়ে যাবেন। প্রতিমার সঙ্গে এক জন বা দু’জন পুজোর কর্মকর্তাদের ঘাট পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এ দিন দুপুর থেকেই গঙ্গায় টহল দিচ্ছে রিভার ট্রাফিক পুলিশের স্টিমার। পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকে ১১ তারিখ (শুক্রবার) পর্যন্ত বিসর্জনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। গঙ্গায় প্রতিমা ভাসান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেনে করে প্রতিমা তুলে ফেলা হবে। এর পর ট্রাকে করে কাঠামো ধাপার মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে।’’

এ বারে গঙ্গা ও তার উপনদীগুলিতে বিসর্জন নিয়ে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা। বিসর্জনের জেরে গঙ্গায় দূষণ হলে সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার কথাও বলা হয়েছে। যদিও এ রাজ্যের পরিবেশ দফতরের দাবি, গঙ্গা দূষণ এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ আগে থেকেই মানা হয়। গত বছর বিসর্জন সংক্রান্ত একটি মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে আরও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে জেলাগুলিতে কতটা নিয়ম মেনে বিসর্জন হয় সে ব্যাপারে অবশ্য পরিবেশকর্মীরা সন্দিহান।

দুর্গাপুজোর বিদায়লগ্নের সঙ্গেই এ বার মিলল আরও এক বিদায় বার্তা। নয়াদিল্লির মৌসম ভবন ঘোষণা করল, দেশ থেকে বর্ষার বিদায়লগ্ন হাজির। আগামী দু’দিনের মধ্যে দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত থেকে বর্ষা বিদায় নিতে শুরু করবে। তার পর ধাপে ধাপে বাকি দেশ থেকে বর্ষা বিদায় নেবে। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আগামী কয়েক দিন বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি মিলতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন