Durga Puja 2020

পুজোর করোনা ঠেকাতে মানুষের ‘সদিচ্ছা’ই এখন ভরসা পুলিশের

এ বার তাই চেতলা সেন্ট্রাল রোডে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে পুজোর দিনগুলি ভাল ভাবে উতরে যেতে চায় লালবাজার।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০২:৩৬
Share:

এ বছরও পুজোয় এমন ভিড় সামলাতে কোমর বাঁধছে কলকাতা পুলিশ।

গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুজোর উৎসবের সূচনা ক্রমেই যেন এগিয়ে আসছে। দ্বিতীয়া বা তৃতীয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে শহরে। এ বছর ভিড় সামলানোর পাশাপাশি পুলিশের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ করোনা সংক্রমণ ঠেকানো। জোড়া চ্যালেঞ্জ সামলেই শহরকে সচল রাখতে পরিকল্পনা করছে তারা।

Advertisement

গত দু’বছর ধরে পুজোর সময়ে যান চলাচল ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে লালবাজারকে সব চেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে রাসবিহারী মোড় এবং চেতলা সেন্ট্রাল রোডে। ভিড় সামলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বার বার সেখানে ছুটে যেতে হয়েছে লালবাজারের কর্তাদের। এ বার তাই চেতলা সেন্ট্রাল রোডে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে পুজোর দিনগুলি ভাল ভাবে উতরে যেতে চায় লালবাজার।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছর চেতলা সেন্ট্রাল রোড এবং চেতলা অগ্রণীর ভিড় সামাল দিতে দু’জন ডিসি-র নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জনের বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। এ ছাড়া, স্থানীয় ট্র্যাফিক গার্ড এবং থানার পুলিশ থাকছে অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, চেতলার পাশাপাশি রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং উল্টোডাঙা এলাকার বিভিন্ন পুজো এলাকায় যান চলাচল যাতে ব্যাহত না হয়, সে দিকে বিশেষ নজর রাখা হবে পুজোর

সময়ে। পুলিশকর্তাদের মতে, লোকাল ট্রেন চলাচল না করলে উল্টোডাঙায় সমস্যা তেমন হবে না। ট্র্যাফিক পুলিশের একটি করে বিশেষ দল ওই সমস্ত এলাকায় থাকবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য।

আবার মধ্য কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও সংলগ্ন বিভিন্ন রাস্তায় যাতে গাড়ি চলাচল বাধাপ্রাপ্ত না হয়, তার জন্য পঞ্চমীর আগে ওই সব রাস্তায় দ্বিতীয় ব্যারিকেড করা হচ্ছে না। তবে প্রথম ব্যারিকেড তৃতীয়া থেকেই থাকছে।

ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা জানান, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ওই ব্যারিকেড করার ফলে দুই প্রান্তের প্রায় ছ’ফুট জায়গা কমে যায়। তাতে পুজোর দিনগুলিতে ব্যাপক যানজট হয়। তাই এ বার তৃতীয়ায় প্রথম ব্যারিকেড হলেও পঞ্চমীর আগে দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য দ্বিতীয় ব্যারিকেড তৈরি হবে না। এ বছর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তৃতীয়াতেই ঠাকুর দেখতে পারবেন সবাই। ফলে ওই দিন থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে আছড়ে পড়তে পারে জনজোয়ার। এই জনজোয়ারে কী ভাবে করোনা ঠেকানো যাবে, সে বিষয়ে ১৩ দফা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে পুজো কমিটিগুলিকে।

পুলিশের নিচুতলার কর্মীরা জানান, পুজোর সময়ে রাসবিহারী মোড়, চেতলা, হাতিবাগান, শিয়ালদহ-সহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা পারাপারের জন্য এক-এক দফায় হাজারখানেক মানুষ গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে থাকেন। ওই ভিড় আটকানোর জন্য কোনও পুলিশি ব্যবস্থাই কার্যকর করা সম্ভব নয়। তা হলে ভিড়ে করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাবে কী ভাবে?

পুলিশকর্তাদের আশা, লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় এ বার শহরতলির অনেকেই কলকাতামুখো হবেন না। কিংবা মেট্রো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলে অন্যান্য বারের মতো ভিড় এ বার হয়তো এড়ানো যাবে। সেই সঙ্গেই অবশ্য তাঁরা বাকিটা নাগরিকদের সচেতনতার উপরে ছেড়ে দিচ্ছেন।

এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘মানুষ চাইলে পুজোর দিনগুলিতেও করোনা রোধ করা যাবে। আর যদি সদিচ্ছা না থাকে, তা হলে কোনও ভাবেই তা আটকানো যাবে না।’’ এ ক্ষেত্রে জনতাই জনার্দন বলে মনে করছে পুজোর সঙ্গে যুক্ত পুলিশের বড় একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement