শিয়ালদহ পর্যন্ত নয়, প্রথম পর্যায়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চলবে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত। আগামী বছরের জুনেই ওই পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে বলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর।
নানা বাধায় ইতিমধ্যেই লক্ষ্য পূরণের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে দু’বার। তার পরেও কেটে গিয়েছে তিন বছর। তাই আর অপেক্ষা করতে চাইছেন না ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তৃপক্ষ। শিয়ালদহে স্টেশনের কাজ শেষ করার অপেক্ষায় না থেকে আপাতত ফুলবাগান পর্যন্ত ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ইস্ট-ওয়েস্টের মুখ্য বাস্তুকার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, ‘‘শিয়ালদহে এখন নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ের (শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড) কাজ শুরু হয়েছে। ফলে ওই স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামা যথেষ্ট কঠিন হবে। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।’’
২০০৮-এর ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় নগরন্নোয়ন মন্ত্রক ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল। পরের বছরের ৪ জুলাই দিল্লির মতো করে রাজ্য সরকার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করতে সম্মত হয়। যাত্রাপথ ঠিক হয় সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান। এর মধ্যে মাটির উপর দিয়ে যাবে ৮.৯ কিলোমিটার, ভূগর্ভে ৫.৭৭ কিলোমিটার। প্রথমে কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০১৪ সালের মার্চ। পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ২০১৬-র সেপ্টেম্বর। কিন্তু তার পরেও কাজ শেষ করা যায়নি।
কিন্তু শিয়ালদহের বদলে ফুলবাগান পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্টের রুট যাত্রীদের কতটা সুবিধা দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেক্টর ফাইভ থেকে অন্তত শিয়ালদহ পর্যন্ত আসতে পারলেও যাত্রীরা লোকাল ট্রেনের সুবিধা নিতে পারতেন। কিন্তু বর্তমান সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাত্রীদের ফুলবাগান থেকে ফের অন্য কিছুতে শিয়ালদহ আসতে হবে। এ ব্যাপারে ইস্ট-ওয়েস্টের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রতিটি মেট্রোই প্রথমে কম দূরত্বে শুরু করেছে। পরে বাড়ানো হয়েছে যাত্রাপথ। এই মেট্রোও তাই ফুলবাগান পর্যন্ত চালালে লাভই হবে।’’ সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেশন হয়েছে করুণাময়ী, বিকাশ ভবন, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল কেমিক্যাল, ইএম বাইপাস, সল্টলেক স্টেডিয়াম, নারকেলডাঙা মেন রোড, ফুলবাগান ও শিয়ালদহ।
ইস্ট-ওয়েস্ট সূত্রের খবর, শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড, সেখান থেকে মহাকরণ হয়ে হুগলি নদীর তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ যাবে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত। হাওড়া ময়দান থেকে হুগলি নদী পর্যন্ত দূরত্ব ১১০০ মিটার। আপ-ডাউন মিলিয়ে সুড়ঙ্গ (টুইন টানেল) কাটা হবে ২২০০ মিটার। এখনও পর্যন্ত যাওয়া-আসা (আপ ও ডাউন লাইন) মিলিয়ে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ হয়েছে ৪৫০ মিটার। নতুন নকশায় হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মোট সুড়ঙ্গ পথের দৈর্ঘ্য হবে ৭.১৯ কিমি।