প্রতিবাদ করে প্রহৃত

ঘটনার পিছনে সরাসরি সিন্ডিকেট ব্যবসার অভিযোগ এখনও ওঠেনি। গত বছরই বাড়ি সারাই করেছিলেন কল্যাণেশ্বরবাবু। তিনি জানান, মালপত্র নেওয়ার চাপ না দিলেও তখন ওই যুবকেরা বাড়ির সামনে ভিড় করত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:২৬
Share:

কল্যাণেশ্বর গঙ্গোপাধ্যায়

গভীর রাতে বাড়ির সামনে মত্ত যুবকদের হুল্লো়ড়, গালিগালাজের প্রতিবাদ করেছিলেন এক প্রৌঢ়। সেই ‘অপরাধে’ জুটল ঘুষি, চ়়ড়, লাথি! পুলিশ জানায়, মত্ত যুবকদের মার খেয়ে বাঁ চোখ ফেটে গিয়েছে কল্যাণেশ্বর গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই প্রৌঢ়ের। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মার খেতে হয় স্ত্রী ও ছেলেকেও। বুধবার রাতে হালতুর গার্ডেন রো়ডের এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে দু’জন গ্রেফতার হয়। বাকিদের খোঁজ চলছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সোনা গায়েন এবং শঙ্কর দাস। কল্যাণেশ্বরবাবুর অভিযোগে বাবুসোনা নামে আরও এক যুবকের নাম আছে। এই ঘটনায় তাঁদের কয়েক জন শাগরেদও জড়িত বলে খবর। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত যুবকেরা হালতু এলাকায় ইট, বালি, সিমেন্ট সরবরাহের সিন্ডিকেট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এলাকায় নানা কুকর্মের অভিযোগও করেছেন অনেকে।

ঘটনার পিছনে সরাসরি সিন্ডিকেট ব্যবসার অভিযোগ এখনও ওঠেনি। গত বছরই বাড়ি সারাই করেছিলেন কল্যাণেশ্বরবাবু। তিনি জানান, মালপত্র নেওয়ার চাপ না দিলেও তখন ওই যুবকেরা বাড়ির সামনে ভিড় করত। তাঁর কথায়, ‘‘মুখে কিছু না বললেও হাবভাবে বোঝাত, ইমারতি মালপত্র নিয়ে কিছু বলতে চায়। সারাইয়ের পরে মার্চ মাসে দোতলার তালা ভেঙে চুরিও হয়। তাতে কেউ ধরা পড়েনি।’’ তাঁর ছেলে জানান, বাড়ির সামনে এক ফালি জমিতে বেআইনি নির্মাণ উঠছিল বলে তাঁরা মামলা করেছেন। তার পর থেকে নির্মাণ বন্ধ। এই ঘটনায় সে সব আক্রোশও কাজ করেছে কি না, খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:ঘুম ভেঙে দেখি খোলা আলমারি, গয়না উধাও

এ দিন পরিবহণ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কল্যাণেশ্বরবাবুর বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, তাঁর বাঁ চোখ ফোলা। বাইরে রক্ত শুকিয়ে জমাট বেঁধেছে। তিনি জানান, রাত ১১টা নাগাদ বাড়ির সামনেই সোনা, শঙ্করেরা মদ্যপান করছিল। সঙ্গে চলছিল গালিগালাজ। অভিযোগ, বছর খানেক ধরে রোজ এমনই চলে। পাড়ার কেউ প্রতিবাদ করেননি। বুধবার উৎপাত সহ্য করতে না পেরেই তিনি ওই যুবকদের থামতে বলেন। তা শুনেই সোনা, শঙ্করেরা ঘুষি মারতে শুরু করে। ধাক্কা মেরে ফেলে লাথিও মারে বলে অভিযোগ। বাবাকে বাঁচাতে ছেলে এলে তাঁকেও পেটানো শুরু হয়। গোলমাল শুনে প্রৌঢ়ের স্ত্রী অসীমাদেবী বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলে তাঁকেও ধাক্কা মারে অভিযুক্তেরা।

অভিযোগ, তখন কোনও প্রতিবেশী বেরোননি। এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, সোনা, শঙ্করদের উপদ্রবে পাড়ার মহিলারা আতঙ্কিত। ভয়ে প্রতিবাদের সাহস হয় না। কল্যাণেশ্বরবাবুর ছেলে বলেন, ‘‘মারার সময়ে সোনারা বলছিল, যেখানে পারিস নালিশ কর। কেউ কিছু করতে পারবে না।’’ এর মধ্যেই ফোন করে বন্ধুদের ডেকেছিলেন প্রৌঢ়ের ছেলে। তা শুনে ওই যুবকেরা মোটরবাইক ও গাড়িতে চেপে পালায়। ওই বন্ধুরা এসে বাবা ও ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন