Elderly Woman

রাস্তায় পড়ে থেকেই মৃত্যু প্রৌঢ়ার, মিলল না সাহায্য  

শুক্রবার এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল এয়ারপোর্ট থানা এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০১:১৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রাস্তার পাশে বসে কাঁপছিলেন অসুস্থ এক প্রৌঢ়া। পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন মানুষ। অথচ এমন দৃশ্য দেখে মুহূর্তের জন্যেও দাঁড়াননি তাঁরা। বেশ কিছু ক্ষণ পরে স্থানীয় কয়েক জন ব্যবসায়ী তাঁকে একটি গাছতলায় রেখে আসেন। এর পরেই অচেতন হয়ে পড়েন ওই মহিলা। খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যায় গিয়ে ওই অচেতন মহিলাকে উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যায়। তত ক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা। পুলিশেরও দাবি, খবর পাওয়ার আগেই মারা যান ওই মহিলা।

Advertisement

শুক্রবার এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল এয়ারপোর্ট থানা এলাকা। এর আগে এমন অমানবিকতার ছবি শহর দেখলেও কোভিড-আতঙ্ক এই মানসিকতা আরও বাড়িয়েছে বলেই মত চিকিৎসক থেকে পুলিশ সকলের।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম রীতা পাত্র (৫৫)। তিনি মধ্যমগ্রামের কৈপুল এলাকার বাসিন্দা। কিছু দিন ধরে বাগুইআটিতে মেয়ের কাছে থাকছিলেন তিনি। শুক্রবার হোমিয়োপ্যাথকে দেখাতে নিউ ব্যারাকপুরে যাওয়ার

Advertisement

জন্য বেরিয়েছিলেন। তখনই পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

শনিবার এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ দাবি করেছে, খবর পাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তারা। একই কথা জানিয়েছেন এয়ারপোর্ট-১ নম্বর গেট এলাকায় কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক কর্মী। তিনি জানান, অচেতন অবস্থায় এক মহিলা গাছতলায় পড়ে রয়েছেন দেখতে পেয়ে তাঁরাই প্রথম থানায় খবর দেন। এর পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাঁর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া পরিচয়পত্র দেখে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

স্থানীয়দের দাবি, করোনার ভয়েই তাঁরা কেউ ওই মহিলার শুশ্রূষা করতে ভরসা পাননি। অবশেষে চড়া রোদের মধ্যে রাস্তায় বসে প্রৌঢ়াকে কাঁপতে দেখে কিছু ব্যবসায়ীই একটি ছাউনির নীচে ওই মহিলাকে রেখে আসেন। অথচ তখনও কেন কেউ পুলিশ কিংবা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানাননি, সেই উত্তর অবশ্য এ দিন মেলেনি।

এ দিন, মৃতার মেয়ে গীতা মণ্ডল জানান, তাঁর মা বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবিটিসের জন্য নিয়মিত চিকিৎসা করাতেন। গীতা বলেন, “একা না যেতে বার বার নিষেধ করেছিলাম। মা শোনেননি।” ওই মহিলার ছেলে বিশ্বজিৎ পাত্র বলেন, “ও ভাবে একা অসুস্থ মানুষকে দেখেও কারও সাহায্যের কথা মনে হল না!’’

এ দিন বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ব্রেন স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ার। তবে কেউ যদি আরও আগে তাঁকে নিয়ে আসতেন তা হলে হয়তো ওঁকে বাঁচানো যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন