বিকল্প রাস্তার খোঁজ। রবিবার মাঝেরহাটে। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর আগেই ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুর পাশে থাকা খালের মধ্যে হিউম পাইপ বসিয়ে রেল লাইনের ওপর দিয়ে রাস্তা করার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। শনিবারই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছিল। রবিবার, জরুরি ভিত্তিতে নগোরন্নয়ন দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা ভাঙা সেতুর পাশে জমি জরিপ করেন।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, জরিপ করার পর ইঞ্জিনিয়াররা আশাবাদী, একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি করা সম্ভব। দ্রুত এই রাস্তা তৈরি হলে মাঝেরহাট সেতু ভাঙায় যে যান-যন্ত্রনা তৈরি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঠিক কোন পথে হবে এই বিকল্প রাস্তা?
রবিবারের জরিপের শেষে ইঞ্জিনিয়ররা লক্ষ্য করেছেন, তারাতলার দিকে মুখ করলে মাঝেরহাট সেতুর পাশ দিয়ে একটি রাস্তা এগিয়ে গিয়েছে খাল পর্যন্ত। তারপরই প্রায় ২২ ফুট চওড়া খাল, পাশে কলকাতা পুরসভার পাম্পিং স্টেশন। সেই পাম্পিং স্টেশনের গা দিয়ে, খালের ওপর বর্তমান রাস্তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: চার সেতুতে নিষিদ্ধ হল মালবাহী গাড়ি
নগরোন্নয়ন দফতরের এক শীর্ষ ইঞ্জিনিয়র বলেন, “বর্ষা প্রায় শেষ। এখন সহজেই এই খালে হিউম পাইপ বসানো সম্ভব।” হিউম পাইপ বসালে, সেই পাইপের মধ্যে দিয়ে খালের জল যেতে পারবে। নিকাশির কোনও সমস্যা হবে না। আবার হিউম পাইপের ওপর দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করা সম্ভব এবং তা বিশেষ সময় সাপেক্ষ নয়, এমনটাই মত ইঞ্জিনিয়রদের।
তবে সমস্যা রেললাইন নিয়ে। রবিবার জরিপের পর দেখা যাচ্ছে খালের পাড়ের মাটির উচ্চতা এবং রেললাইনের উচ্চতার অনেকটাই ফারাক রয়েছে। রেললাইন অনেকটাই নীচে। সেক্ষেত্রে রেললাইনের যে অংশে রাস্তা হবে, সেই অংশটি উঁচু করতে হবে। সেক্ষেত্রে রেলের বিশেষজ্ঞরা জানাবেন কতটা উঁচু করতে পারলে রেল চলাচলে কোনও অসুবিধের সৃষ্টি হবে না।
আরও পড়ুন: সেতুর দায় নিয়ে তরজায় পুরসভা ও কেএমডিএ
এর পর রেল লাইন পেরোলেই বর্তমান সেতুর বাঁদিক দিয়ে একটি অপরিসর রাস্তা রয়েছে। সেই রাস্তা সোজা গিয়ে তারাতলা মোড়ে উঠেছে। সেই রা্স্তায় একটি দোতলা বাড়ি থাকায় তা যান চলাচলের অনুপযুক্ত। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই বাড়িটি সরকারের। বিশেষজ্ঞদের মত, ওই বাড়ি ভাঙলে খুব সহজেই ওই রাস্তাটি ব্যবহার করা যাবে বিকল্প পথ হিসাবে।
সোমবার রাজ্য সরকারের বিশেষজ্ঞরা রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানেই তৈরি হবে চূড়ান্ত রূপরেখা। বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী, সব কিছু ঠিকঠাক চললে, খাল ও রেললাইন ও বাড়ির ওপর দিয়ে বিকল্প রাস্তা পূজোর আগেই চালু করে দেওয়া সম্ভব। তবে সব কিছুর পর একটি বিষয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ভাঙা সেতুর পাশ দিয়ে এই রাস্তা নিয়ে যাওয়া আদৌ কতটা নিরাপদ? কারণ পুর্ত এবং নগরোন্নয়ন দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ বলছেন সেতুর ভাঙা অংশ মেরামত করলেই ফের এই সেতু চালু করা সম্ভব। আরেকটি অংশ আবার মনে করছেন সেতুর হাল এতটাই খারাপ যে, গোটা সেতুই ভেঙে নতুন করে করা উচিৎ। সেক্ষেত্রে ভাঙা সেতুর পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরি হলেও থেকে যাচ্ছে ঝুঁকি।
(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজ জানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)