আউটসোর্স-নীতিই কি জালিয়াতির কারণ

এজেন্সিগুলি পরিষেবা চালানোর খরচ কমিয়ে মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী রাখা হয় না। যার ফলে রক্ষীবিহীন এটিএম কাউন্টারে ঢুকে দুষ্কৃতীরা অনায়াসেই স্কিমার বা নকল কি-বোর্ড লাগিয়ে যেতে পারে।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০১:৩৮
Share:

রক্ষীর বালাই নেই, সারাদিন এ ভাবেই খোলা থাকে এটিএমের দরজা। দমদমের সেভেন ট্যাঙ্কসে। নিজস্ব চিত্র

এটিএম থেকে টাকা তোলার সময়ে গ্রাহককে ‘পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার’ (পিন) দিতে হয়। যার ফলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এটিএমে চলে আসে। সেই তথ্য জালিয়াতদের হাতে গেলেই সর্বনাশ! অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া যেতে পারে টাকা। অথচ, সেই এটিএম যন্ত্র বসানো থেকে শুরু করে তার রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ থেকে যন্ত্রে টাকা ঢোকানো বা সেখান থেকে টাকা তোলা— কোনও কিছুর দায়িত্বেই কিন্তু ব্যাঙ্কের কর্মীরা থাকেন না। এর দায়িত্ব দেওয়া হয় বাইরের সংস্থার হাতে। যাকে পোশাকি ভাষায় বলা হয় ‘আউটসোর্স’ করা।

Advertisement

এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা ব্যাঙ্কের বাইরের লোকেদের দিয়ে করানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিরাট ঝুঁকি যে রয়েছে, তা মেনে নিচ্ছে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত ইউনিয়নগুলি। ‘অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন’ (এআইবিইএ)-এর সভাপতি রাজেন নাগর এবং ‘অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন’ (আইবক)-এর রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাসের বক্তব্য, এটিএম পরিষেবা চালানোর জন্য ব্যাঙ্কগুলি বাইরের এজেন্সিকে বরাত দেয়। এজেন্সিগুলি পরিষেবা চালানোর খরচ কমিয়ে মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী রাখা হয় না। যার ফলে রক্ষীবিহীন এটিএম কাউন্টারে ঢুকে দুষ্কৃতীরা অনায়াসেই স্কিমার বা নকল কি-বোর্ড লাগিয়ে যেতে পারে।

সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘কলকাতায় কানাড়া ব্যাঙ্কের মোট ৭২টি এটিএম রয়েছে। তার মধ্যে ৬৫টি এটিএমেই নিরাপত্তারক্ষী নেই। ইউবিআই-এর ১৮৪টি এটিএম-ই রক্ষীবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এমনকি, স্টেট ব্যাঙ্কের মোট ১২৩৯টি এটিএমের মধ্যে ৬৭৭টি এটিএমেই রক্ষী নেই।’’

Advertisement

রাজেনবাবুর অভিযোগ, ‘‘সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাঙ্ক প্রায় ১৮০০ নিরাপত্তারক্ষী ছাঁটাই করেছে। তার বদলে তারা এটিএমগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে। কিন্তু অঘটন বন্ধ করার ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা কোনও কাজে আসে না। ক্যামেরাকে ফাঁকি দেওয়ার কৌশলও দুষ্কৃতীদের জানা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement