প্রকাশ্যে এক গয়নার দোকানের কারিগরকে ‘অপহরণ’ করে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার সোনা ও হিরের গয়না লুঠের অভিযোগ উঠেছিল আয়কর দফতরের ভুয়ো পরিচয় দেওয়া দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেফতার করল খোদ অভিযোগকারীকেই। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম পরিমল দে। তার বাড়ি নদিয়ায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুরে পোস্তা থানার রবীন্দ্র সরণির একটি গয়নার দোকানের কর্মচারী পরিমলকে এলাকারই একটি সোনার দোকানে লক্ষাধিক টাকার গয়না পৌঁছে দিতে বলেছিলেন দোকানের মালিক। পরিমল পুলিশে অভিযোগ জানায়, মাঝরাস্তা থেকে দুই ব্যক্তি নিজেদের আয়কর কর্মী পরিচয় দিয়ে তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয় এবং অচৈতন্য অবস্থায় হাওড়ার সলপে একটি সেতুর কাছে ফেলে রেখে দিয়ে পালায়। যাওয়ার সময় তারা গয়নার ব্যাগটিও নিয়ে যায়।
তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে রবীন্দ্র সরণি ও সলপে গিয়েও অপহরণ বা লুঠের পক্ষে কোনও জোরালো প্রমাণ পায় নি। দু’টি জায়গাই অত্যন্ত জনবহুল হওয়া সত্ত্বেও মেলেনি কোনও প্রত্যক্ষদর্শী। এর পরই পরিমলকে লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখায় এনে জেরা করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পরিমলের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি পায় পুলিশ।
গোয়েন্দাদের দাবি, বারবার জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে পরিমল। মিথ্যে অপহরণ ও লুঠের কথা স্বীকার করে নেয় সে। রাতেই পরিমলকে নিয়ে হানা দেওয়া হয় গিরিশ পার্কের কারখানায়। উদ্ধার হয়েছে সমস্ত গয়না। জেরায় পরিমল আরও জানিয়েছে, সোনার দোকানে কাজ করলেও মালিক তাকে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করতেন। সেই ক্ষোভ থেকেই লুঠের মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে সে। সোমবার আদালতে বিচারক ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিমলকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।