Princep Ghat

Death: ছেলের খোঁজে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে ঘুরছেন বাবা

গত পাঁচ দিন ধরে ছেলের খোঁজে এ ভাবেই হন্যে হয়ে ঘুরছেন গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাওয়া বছর চোদ্দোর সৌম্যজিৎসরকারের বাবা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২২ ০৫:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোনও দিন সকালে দক্ষিণেশ্বরের দিকের ঘাটে খুঁজে বিকেলে চক্কর কাটছেন বাগবাজার, বাবুঘাট, বাজেকদমতলা ঘাটে। কোনও দিন এর উল্টো পথ ধরছেন। কখনও সকাল থেকে পড়ে থাকছেন থানা, রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসে। তাঁর একটাই আর্তি, ‘‘নৌকা নিয়ে আর এক বার ঘুরে দেখুন না, যদি ছেলেটাকে পাওয়া যায়!’’

Advertisement

গত পাঁচ দিন ধরে ছেলের খোঁজে এ ভাবেই হন্যে হয়ে ঘুরছেন গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাওয়া বছর চোদ্দোর সৌম্যজিৎসরকারের বাবা। রবিবার রাত পর্যন্ত ওই কিশোরের সন্ধান মেলেনি। এ দিনবিকেলেও গঙ্গার এ ঘাট-ও ঘাট করে বেড়িয়েছেন সৌম্যজিতের বাবা বিশ্বজিৎ সরকার এবং তাঁর আত্মীয়েরা। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ‘‘বাড়িতে থাকব কী ভাবে? ওর মায়ের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না।’’

মঙ্গলবার বিকেলে খেলতে যাওয়ার নাম করে বেরিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির সৌম্যজিৎ। বন্ধুদের সঙ্গেই বিপিন গাঙ্গুলি রোডের বাড়ি থেকে বাগবাজারের বিচালিঘাটে চলে যায় ওই কিশোর।সবাই মিলে গঙ্গায় স্নান করতে নামে।বাকিরা স্নান করে ঘাটে উঠে এলেও ওঠেনি সৌম্যজিৎ। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘প্রতিদিনই খেলতে যেত। সে দিন সন্ধ্যায় থানা থেকে ফোন করে জানানো হয়, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে বিচালি ঘাটে ছেলে তলিয়েগিয়েছে।’’ পুলিশের পাশাপাশি বিশ্বজিৎবাবুও নৌকা ভাড়া করে সাধ্যমতো গঙ্গার দু’ধারে তন্ন তন্ন করে খুঁজে চলেছেন।

Advertisement

উত্তর বন্দর থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক জানাচ্ছেন, ঘটনার পরেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা তল্লাশি চালিয়েছিলেন। ডুবুরিও নামানো হয়েছিল।ঘটনার পরদিন সকাল থেকে গঙ্গার এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত নৌকা নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। পুলিশের তরফে যা যা করা সম্ভব,সব করা হয়েছে। ওই আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘আশপাশের সব থানায়কিশোরের ছবি পাঠানোহয়েছে। খোঁজ পেলেই পরিবারকে জানানো হবে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেহভেসে ওঠে। কিন্তু জলের নীচে কোথাও আটকে গেলে মুশকিল হয়।’’

কিন্তু বাবার মন সে সব মানছে কোথায়? তাই সকাল-বিকেল তিনি ঘুরে চলেছেন ঘাটে, থানায় আর রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসে। কোনও ঘাটে লোক দেখলেই মোবাইলে ছেলের ছবি দেখিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘‘একে কি কোথাও দেখেছেন?’’ রবিবার বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘ঘাটে তো অনেক খুঁজলাম। পুলিশ যদি হাসপাতালগুলোও একটু দেখে। হয়তো কেউ সেখানে রেখে গিয়েছে ছেলেটাকে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন