মৃতের বাবার অভিযোগ, গ্রেফতার ‘প্রেমিকা’

যুবতীর বাড়ির সামনে নিজের মাথায় গুলি করে যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় ওই যুবতীকে গ্রেফতার করল মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। মৃত যুবকের বাবা কৃষ্ণপদ পালের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৩
Share:

পল্লব পাল — নিজস্ব চিত্র

যুবতীর বাড়ির সামনে নিজের মাথায় গুলি করে যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায় ওই যুবতীকে গ্রেফতার করল মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। মৃত যুবকের বাবা কৃষ্ণপদ পালের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার বারাসত আদালত ওই যুবতীকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

Advertisement

রবিবার বিকেলে মধ্যমগ্রামের বিবেকানন্দনগরে ওই যুবতীর বাড়ির সামনে গিয়ে গিয়েছিলেন বাগুইআটির যুবক পল্লব পাল। সেখানে নিজের মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মঘাতী হন পল্লব। তাঁর পকেটে একটি সুইসাইড নোটও মেলে। তাতে লেখা ছিল, ওই যুবতী বিয়েতে রাজি না হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনি।

রবিবার রাতেই ছেলের আত্মহত্যার জন্য ওই যুবতীকে দায়ী করে অভিযোগ দায়ের করেন পল্লবের বাবা কেষ্টপদ পাল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করে ওই যুবতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার বারাসত আদালতে শুনানির পরে যুবতীর মা বলেন, ‘‘ঘুরতে গিয়ে আমার মেয়ের সঙ্গে ছেলেটির আলাপ হয়। পরে ছেলেটি প্রেম আর বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমার মেয়ে রাজি হয়নি।’’ ওই যুবতীর বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন পল্লবের পরিবারের লোকেরাও।

Advertisement

তা হলে ওই যুবতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হল কেন?

কৃষ্ণপদবাবুর দাবি, ‘‘পুলিশের কাছে এমন কিছু শুনেছি, যার ফলে আমার মনে হয়েছে, আমার ছেলেকে মানসিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাই আমি অভিযোগ করেছি। আমি ঘটনার তদন্ত চাই।’’

পালপাড়ায় পল্লবের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে পল্লবের বিবাহ-বিচ্ছেদ হলেও প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে ২০১০ সালের পর থেকে তাঁর কোনও যোগাযোগ ছিল না। পল্লবের ১১ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। যোগ-ব্যায়ামের প্রশিক্ষণ দেওয়া ছিল তাঁর পেশা। পল্লব রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্ত। সম্প্রতি তিনি ডিওয়াইএফআই-এর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটিতে যোগ দেন। পল্লবের মা মায়াদেবী বলেন, ‘‘রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ছেলে বাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়েছিল। পাঁচটা নাগাদ পুলিশ আমাদের ওর আত্মহত্যার খবর দেয়। আমার ছেলের কোনও মানসিক সমস্যা ছিল না। মানসিক সমস্যা থাকলে কি কেউ নিয়মিত ট্রেকিং-এ যেতে পারে? যোগাসন শেখাতে পারে?’’

এ দিন বিবেকানন্দনগর এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘‘বিবাহিত এক যুবকের ফের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হওয়া বা না হওয়াটা এক জন স্বাবলম্বী, শিক্ষিত মেয়ের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তার জন্য কেউ যদি এমন কাণ্ড করে, তা হলে সেই মেয়েকে কেন এ ভাবে ভুগতে হবে?’’

এর জবাবে উত্তর ২৪ পরগনার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘মৃত ছেলের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়েছে। আদালতে তার বিচার চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন