কলকাতা ছেড়ে তত ক্ষণে প্রায় ৩৫ মিনিট উড়ে গিয়েছিল বিমান। আচমকাই ডান দিকে ঘুরতে শুরু করে সেটি। ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে পাইলটের ঘোষণা শোনা যায়— ‘কলকাতা ছেড়ে আমরা ৬০ কিলোমিটার চলে এসেছি। বিমানে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। আমরা আবার কলকাতায় ফিরছি। সেখানে বিমানটি সারাতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে।’’
আধ ঘণ্টা নয়, মঙ্গলবার সেই বিমান সারিয়ে ছাড়তে লেগে গিয়েছে চার ঘণ্টা। তত ক্ষণ যাত্রীদের অনেকটা সময় বিমানের ভিতরে, অনেকটা আবার টার্মিনালে বসিয়ে রাখা হয়। যে উড়ানের সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ দিল্লি পৌঁছনোর কথা ছিল, সেটি বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ দিল্লি পৌঁছয়। এক যাত্রী সিদ্ধার্থ সেন বলেন, ‘‘সকাল ছ’টায় কলকাতা বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। আর সওয়া পাঁচটায় দিল্লি বিমানবন্দর থেকে বেরোলাম।’’
এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া-র ওই বিমানটির এ দিন সকাল আটটায় কলকাতা থেকে রাঁচী হয়ে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। সেটি সময়মতো রওনাও হয়।
সিদ্ধার্থবাবু জানিয়েছেন, সকাল আটটায় ছেড়ে মাঝ আকাশ থেকে বিমানটি কলকাতায় ফিরে আসে ন’টার কিছু পরে। তার পরেই শুরু হয় টানাপড়েন। যাত্রীদের বিমানের ভিতরে বসিয়ে রেখে শুরু হয় বিমান সারানোর কাজ। দু’দফায় ইঞ্জিনিয়ারেরা আসেন। কিন্তু পাইলটের প্রতিশ্রুতি মতো আধ ঘণ্টার মধ্যে ত্রুটি সারাতে না পেরে সওয়া দশটা নাগাদ যাত্রীদের নামিয়ে আনা হয় বিমান থেকে।
প্রথমে বলা হয়, যাত্রীদের ইন্ডিগো-র বিমানে রাঁচী ও দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যে সব যাত্রীর চেক-ইন ব্যাগ ছিল, যা বিমানের পেটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি নামিয়ে আনা হয়। কলকাতা বিমানবন্দরের টার্মিনালের একতলায় যাত্রীদের নামিয়ে তাঁদের আবার তুলে আনা হয় ‘ডিপারচার’ এলাকায়।
ইন্ডিগো-র দুপুর একটার উড়ানে দিল্লিগামী যাত্রীদের পাঠাতে গিয়ে জানা যায়, জায়গা নেই। ঠিক হয়, তিনটেয় ইন্ডিগো-র যে উড়ান রয়েছে, তাতে পাঠানো হবে। তত ক্ষণে সারানো হয়ে যায় এয়ার এশিয়ার বিমানটিও। অনেক যাত্রীই ওই বিমানে যেতে রাজি হননি। অনেকে টিকিট বাতিল করে দেন। বাকিদের নিয়ে দুপুর একটার পরে বিমানটি রওনা হয়ে যায়।
এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।