প্রতীকী ছবি।
জন্মের এক বছর পরেই ধরা পড়েছিল শিশুটি স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত। তবে টানা চিকিৎসায় বতর্মানে অনেকটাই সুস্থ। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শে বছর দু’য়েক আগে তাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন তার বাবা-মা। স্কুলকেও তাঁদের সন্তানের অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে গোলমাল করার অভিযোগে ছ’বছরের ওই শিশুকে স্কুলের এক শিক্ষিকা শুধু মানসিক নির্যাতনই করেননি, তার গোপনাঙ্গে স্কেল দিয়ে আঘাত করেছেন। এমনকি পিঠে ঘুষি মেরেছেন বলেও অভিযোগ। আতঙ্কিত শিশুটি তার পর থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও মারধরের ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এমনই অভিযোগ উঠেছে হাওড়ার রামকৃষ্ণপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই স্কুলে নার্সারি শ্রেণিতে পড়ে অনীশ ভট্টাচার্য নামে শিশুটি। বাড়ি হাওড়া হোম্স এলাকার ব্রজনাথ লাহিড়ী লেনে। বাবা আর্য ভট্টাচার্য রাজ্য ভূতল পরিবহণ দফতরের কর্মী। মা মধুমিতা গৃহবধূ। মধুমিতার অভিযোগ, গত শুক্রবার অনীশের টিফিন ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। তখন এক শিক্ষিকা এসে স্কেল দিয়ে অনীশকে মারধর করেন। তার পায়ে কালশিটে পড়ে যায়। আরও অভিযোগ, তিনি ওই স্কেল দিয়ে অনীশের গোপনাঙ্গে আঘাত করেন এবং পিঠে ঘুষি মারেন। মায়ের অভিযোগ, আতঙ্কে শিশুটি কাঁদতেও পারেনি। ছুটির পরে মাকে দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁপতে শুরু করে।
মধুমিতা বলেন, ‘‘বাড়ি ফেরার পরেও ছেলে মারধরের কথা বলেনি। রাতে গোপনাঙ্গে যন্ত্রণা শুরু হয়। জ্বর আসে। সোমবার খানিকটা সুস্থ হয়ে উঠলে আমাকে সবটা বলে।’’ এর পরেই মধুমিতা এবং তাঁর স্বামী শিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্রকেও জানান। সোমবার সকালে শ্যামলবাবু ওই স্কুলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনাটি তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
তবে ওই পড়ুয়াকে মারধর বা নির্যাতনের অভিযোগই মানতে রাজি নন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রশাসক শৌর্যসাধন বসু বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে এই ধরনের মারধর বা মানসিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে না। এই ঘটনাও ঘটেনি। ছেলেটিই পড়াশোনায় অমনোযোগী। অন্য ছেলেমেয়েদের গায়ে কারণে-অকারণে থুতু দেয়। বহু অভিভাবক ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তবে ঘটনাটি যদি ঘটে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’’