প্রেসক্রিপশন ছাড়া মিলছে না জ্বরের ওষুধও, ভোগান্তি হাওড়ায়

হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে শুধু উত্তর বা মধ্য হাওড়া নয়, করোনার রেড জ়োন গোটা হাওড়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২০ ০৩:১২
Share:

প্রতীকী চিত্র।

নাতনির জ্বর-সর্দি হওয়ায় পাড়ার দোকান থেকে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন উত্তর হাওড়ার বাসিন্দা, ষাটোর্ধ্ব অমল সরকার। দূরত্ব-বিধি মেনে প্রায় এক ঘণ্টা পরে যখন তিনি কাউন্টারে পৌঁছে জ্বর-সর্দির ওষুধ চাইলেন, তখন জানানো হল প্রেসক্রিপশন ছাড়া দেওয়া যাবে না। পুলিশের নির্দেশ। বৃদ্ধ বোঝাতে চেষ্টা করেন, করোনার জন্য হাওড়ায় বেশির ভাগ চিকিৎসক রোগী দেখছেন না। তা হলে কি মানুষ ওষুধও পাবেন না? এতেও অবশ্য ওষুধ মেলেনি।

Advertisement

একই অভিজ্ঞতা মধ্য হাওড়ার তনিমা পালের। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে প্রতিবারই টনসিলের সমস্যা হয় শাশুড়ির। এ দিকে, পুরনো প্রেসক্রিপশন হারিয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে ডাক্তার না বসায় ওষুধের দোকানে আগের অ্যান্টিবায়োটিকের নাম বলে কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁকেও বলা হল, ‘প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ দেওয়া যাবে না’।

হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে শুধু উত্তর বা মধ্য হাওড়া নয়, করোনার রেড জ়োন গোটা হাওড়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। যার জেরে প্রেসক্রিপশন ছাড়া সামান্য জ্বর-সর্দির ওষুধ কিনতে গেলেও মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ সরকারি নির্দেশিকা দেখাতে পারছেন না দোকানদারেরা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, ‘পুলিশ বলেছে’।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি না করার কথা কোনও ভাবেই বলা হয়নি। হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল, করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। তাই যে ক্রেতারা প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কিনছেন তাঁদের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর লিখে রেখে থানায় জানাতে হবে। যাতে স্বাস্থ্যকর্মীরা নজর রাখতে পারেন, কোন এলাকায় করোনার উপর্সগ বাড়ছে।’’

একই বক্তব্য ওষুধ বিক্রেতাদের সংগঠন বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিডিএ)। বিসিডিএ-র হাওড়া দক্ষিণ জ়োনের সম্পাদক অরুণ বেরা বলেন, ‘‘নো প্রেসক্রিপশন, নো মেডিসিন— এমন নির্দেশ জেলা স্বাস্থ্য দফতর দেয়নি। কয়েকটি থানা থেকে এমন বলা হচ্ছে। এই বিভ্রান্তি দূর হওয়া দরকার।’’ সেই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, অনেক ক্রেতা নাম-ঠিকানা দিতে অস্বীকার করছেন। এই বিষয়টাও দেখা দরকার।

যদিও অধিকাংশ ক্রেতার অভিযোগ, ওষুধের দোকানই ঠিক তথ্য দিচ্ছে না। যাঁদের ওষুধের প্রয়োজন তাঁরা কেন নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর দিতে অস্বীকার করবেন? এ সব নিতে গেলে বিক্রির সময় নষ্ট হবে বলে ‘নো প্রেসক্রিপশন, নো মেডিসিন’ প্রচার হচ্ছে।

আরও পড়ুন: টালা থেকে নিখোঁজ মা-ছেলে উদ্ধার

মা-মেয়ের দেহ উদ্ধার, আটক ৪

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ দেওয়া যাবে না বলে কোনও নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি। কোন থানা কী ভাবে সরকারি বিজ্ঞপ্তির অন্য ব্যাখ্যা করেছে, তা খোঁজ নেওয়া হবে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন