অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও সিসিটিভি, নজরদারির মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

ভরসার জায়গাতেই রয়ে গিয়েছে বড়সড় খামতি। সরকারি, বেসরকারি অফিস থেকে বাণিজ্যিক বহুতল, সবেতেই নিরাপত্তার বড় ভরসা এখন সিসিটিভি এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩৩
Share:

ভরসার জায়গাতেই রয়ে গিয়েছে বড়সড় খামতি। সরকারি, বেসরকারি অফিস থেকে বাণিজ্যিক বহুতল, সবেতেই নিরাপত্তার বড় ভরসা এখন সিসিটিভি এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। শহরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশ, দমকলের আধিকারিকরা সিসিটিভি ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উপর বেশি করে আস্থা রাখলেও এখনও এই দুই ব্যবস্থার উপর নজরদারির যথাযথ অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেছে ফায়ার অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া। শুক্রবার মধ্য কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে অগ্নিনিরাপত্তা শীর্ষক এক আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল নীলাঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় এখন উইপ্রোর কলকাতার শাখার নিরাপত্তা প্রধান। নীলাঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘নিরাপত্তার স্বার্থে সিসিটিভি বসানোর রেওয়াজ এখন বাড়ছে। অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি বসানো থাকলেও ফুটেজ পরীক্ষা যথাযথ হয় না। কোনও বড় বিপদের পর টনক নড়ে।’’ প্রযুক্তিবিদ সৌমেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কলকাতায় যে সমস্ত সিসিটিভি বসানো রয়েছে তার অধিকাংশই ক্যামেরার মান ভাল নয়। ক্যামেরার মান যত ভাল হবে, ফুটেজ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ততটাই সুবিধা হবে।’’ বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার রাজা গুহ জানান, ‘‘শুধু সিসিটিভি বসালেই হবে না। ভিডিও অ্যানালিটিক্স-এর উপরেও জোর দিতে হবে।’’

আগুন লাগলে তার মোকাবিলা কী ভাবে করা যাবে, সে বিষয়েও মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা। বক্তারা জানান, দিন বাড়ার সঙ্গে বহুতলের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই অত্যাধুনিক মানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গড়ে উঠলেও সেই সমস্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত কর্মচারীর অভাব রয়েছে বলে করেন প্রাক্তন দমকল অধিকর্তা দেবপ্রিয় বিশ্বাস। দেবপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সবকিছু থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিপর্যয় মোকাবিলায় নিয়মিত মহড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’’

Advertisement

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সোসাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ফায়ার ম্যানেজমেন্টের বিভাগীয় প্রধান সর্বাণী মিত্রও বলেন, ‘‘বিভিন্ন বহুতলে এখন অত্যাধুনিক মানের অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মুশকিলটা হল, প্রশিক্ষিত কর্মী না থাকায় বিপদের সময় সবকিছু থাকলেও কোনও কাজে আসে না।’’ বিপদ ঠেকাতে বহুদিনের পুরনো সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ফায়ার অডিট করাটা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন সর্বাণীদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘বছরখানেক আগে সরকারি গাড়ির ডিপো বেলগাছিয়ায় আগুন লাগার পর পরিবহমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ফায়ার অডিটের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা ইতিমধ্যে ওই অডিট রিপোর্টও জমা দিয়েছি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ডিপোর অগ্নিনিরাপত্তা জোরদার করার কাজও শুরু করেছে দফতর।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘পরিবহণ দফতরের মতো অনেক দফতর অডিট করার বিষয়ে আমাদের মৌখিক ভাবে জানিয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ তারা এগিয়ে আসেনি। আলোচনার স্তরেই রয়ে আছে। সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় ফায়ার অডিট করানোটা ভীষণ জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন