আঁধারে হাওড়ার প্ল্যাটফর্ম

চিঠির ঘরে আগুন লেগে ছড়াল আতঙ্ক

সোমবার দুপুরে এ ভাবেই আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়াল হাওড়া স্টেশনের নয়া কমপ্লেক্সে। স্টেশন সূত্রে খবর, আগুন লেগেছিল ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন ডাক বিভাগের একটি ঘরে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৯
Share:

আগুন নেভাচ্ছেন এক দমকল কর্মী। সোমবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র

ঘড়িতে তখন দুপুর দুটো। কয়েক মিনিট পরেই ছাড়বে হাওড়া-দিঘা কাণ্ডারী এক্সপ্রেস। কেউ আসন সংরক্ষণের তালিকায় নিজের নাম খুঁজছেন, কেউ মালপত্র নিয়ে ছুটছেন কামরা খুঁজতে, কেউ আবার সবে ট্রেনে উঠে বসেছেন। আচমকাই কালো ধোঁয়ায় ভরে গেল গোটা প্ল্যাটফর্ম। ভয়ে দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দিলেন যাত্রীরা। মুহূর্তের মধ্যে নিভে গেল স্টেশনের সমস্ত আলো, পাখা, ডিসপ্লে বোর্ড।

Advertisement

সোমবার দুপুরে এ ভাবেই আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়াল হাওড়া স্টেশনের নয়া কমপ্লেক্সে। স্টেশন সূত্রে খবর, আগুন লেগেছিল ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন ডাক বিভাগের একটি ঘরে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। তবে ওই ঘর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ১১ হাজার ভোল্টের যে সাব-স্টেশন রয়েছে, তাতে আগুন ছড়ালে যে বড় বিপদ ঘটে যেত, তা স্বীকার করেছেন রেলের কর্তারাও। উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই শিয়ালদহ স্টেশনের তিনতলার একটি অফিসে আগুন লেগে কাগজপত্র পুড়ে গিয়েছিল। কালো ধোঁয়ায় চার দিক ভরে যাওয়ায় ভয়ে অফিস ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন কর্মীরা।

এ দিন ঘটনার পরে হাওড়া স্টেশনে ডাক বিভাগের ওই ঘরটি ঘুরে দেখেন হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম মনু গয়াল। রেল সূত্রে খবর, ঘরটিতে বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেনে আসা ও পাঠানোর চিঠিপত্র রাখা হয়। দমকল জানায়, ওই ঘরে একটি হিটারের উপরে বসানো অ্যালুমিনিয়ামের বড় হাঁড়ি ফেটে যায়। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ওই ঘটনার জেরেই আগুন লাগে। পুড়ে যায় কিছু কাগজপত্র-সহ দু’টি আলমারি, টেবিল, চেয়ার, কয়েকটি হিটার ও রান্নার বাসনপত্র। প্রশ্ন হল, ওই ঘরে হিটার জ্বালিয়ে কে বা কারা চলে গিয়েছিলেন? ডিআরএম বলেন, ‘‘বড় ক্ষতি হয়নি। তবে ওই ঘরে হিটার ও রান্নার বাসনপত্র কেন ছিল, তা দেখতে হবে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও নির্ধারিত সময় সওয়া দুটোতেই কাণ্ডারী এক্সপ্রেস স্টেশন ছেড়েছে। তবে ১৭ নম্বর থেকে ২১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত গোটা স্টেশন চত্বর প্রায় এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট অন্ধকার ছিল। ২১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে একটি বইয়ের স্টলের কর্মী সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘আচমকা কালো ধোঁয়া, যাত্রীদের হুড়োহুড়ি দেখে ভাবলাম, কোনও গণ্ডগোল হচ্ছে। গিয়ে দেখি, আগুন লেগেছে। ভয়ে ট্রেন থেকে অনেকে নেমে পড়লেও আবার উঠে যান।’’

আগুন লাগার পরেই স্টেশন চত্বরের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তি হয় অন্য যাত্রীদেরও। দুপুর তিনটে নাগাদ ১৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সামনে দাঁড়িয়ে ধ্রুবকুমার জানা নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘রাধামোহনপুর যাওয়ার জন্য ভদ্রক প্যাসেঞ্জার ধরব। ৩টে ২৫ মিনিটে ট্রেন। কিন্তু কোন প্ল্যাটফর্মে আসবে, বুঝতে পারছি না।’’ অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় প্ল্যাটফর্মের অনুসন্ধান কার্যালয়ের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রীরা জানতে পারেননি ট্রেনের খবর। শেষে ৩টে ২০ মিনিট নাগাদ ফের আলো জ্বলে স্টেশনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন