স্টার থিয়েটারের পার্কিং এলাকার এখানেই লাগে আগুন (চিহ্নিত)। বৃহস্পতিবার, হাতিবাগানে। নিজস্ব চিত্র
প্রিয়া সিনেমা হলের স্মৃতি ফিরিয়ে আগুন আতঙ্ক স্টার থিয়েটার চত্বরে। সন্ধ্যায় বন্ধ রাখতে হল সিনেমার শো। উপস্থিত দর্শকদের বার করে আনা হল রাস্তায়। বৃহস্পতিবারের এই অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব গিয়ে পড়ল হাতিবাগানের পুজোর বাজারেও। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সন্ধ্যার দিকে প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল বাজারের একাংশ। যার জেরে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয় ওই চত্বরে।
দমকল সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন লাগে স্টার থিয়েটারের পার্কিং এলাকায়। একটি বিদ্যুতের তার থেকে প্রথমে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন এক কর্মী। এর পরে থিয়েটার কর্তৃপক্ষ দমকলে খবর দেন। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগের তিরিশ মিনিট হুলস্থুল চলে স্টার থিয়েটার চত্বরে। স্টার থিয়েটারের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার এক আধিকারিক জানান, ধোঁয়া দেখা যেতেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হলের ভিতরে তখন একটি হিন্দি সিনেমার শো চলছিল।
দর্শকদের দ্রুত বার করে আনা হয়। তিনি বলেন, ‘‘৬টা ২০ মিনিটে শো শুরু হওয়ার দশ মিনিটের মধ্যেই এই অবস্থা!’’ সেই সঙ্গে ওই আধিকারিকের দাবি, ‘‘তিরিশ মিনিটের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। স্টারে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব রকম ব্যবস্থা ছিল।’’
প্রসঙ্গত, গত অগস্টে আগুন লাগে প্রিয়া সিনেমা হলের নীচের রেস্তরাঁয়। সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সিনেমা হল থেকে দর্শকদের বার করে আনতে হয়। এই ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়। সেই থেকে এখনও বন্ধ ওই সিনেমা হল।
এ দিনের ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর না থাকলেও আগুনের জেরে রবীন্দ্র সরণির এক পারে হাতিবাগান বাজারের একাংশের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্ধকারের মধ্যে পুজোর বাজারে আসা ক্রেতাদের তখন দিশেহারা অবস্থা। অনেকেই ভয়ে ছুটতে শুরু করেন বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। হরি ঘোষ স্ট্রিটের বাসিন্দা এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘পুজোর তো আর বাকি নেই। শেষ মুহূর্তের কয়েকটা জিনিস কিনতে এসেছিলাম। হঠাৎ দেখি রাস্তার এক দিকে সব অন্ধকার হয়ে গেল। শুনলাম স্টারে আগুন লেগেছে। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’’
আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর মন্তব্য, ‘‘পুজোর আগে বিপদ যেন আর শেষ হচ্ছে না!’’ হাতিবাগান বাজার মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘পুজোর আগের শেষ মুহূর্তের বাজার চলছে। সন্ধ্যায় ভালই ভিড় ছিল। হঠাৎ আমাদের পারের দিকে সব অন্ধকার হয়ে গেল। তখন অনেক লোকের ভিড়।’’
সন্ধ্যার পরে অবশ্য হাতিবাগানে পুজোর বাজারের চেনা ছবিই দেখা গিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে জেনে রঞ্জনবাবু বলছিলেন, ‘‘বাগড়ির ঘটনার পরে ভয় ধরে গিয়েছে। বড় কিছু ঘটেনি এটাই রক্ষে!’’