First trial run

মহড়া দৌড় শুরু ইস্ট-ওয়েস্টে

পরীক্ষামূলক ভাবে চলল হল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম রেক

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:০১
Share:

যাত্রা শুরু: পরীক্ষামূলক ভাবে চলল হল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম রেক। বুধবার, সল্টলেকে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

কারশেড থেকে বেরিয়ে ডিপোর মধ্যে কয়েক বার থেমে প্রথম লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত পৌঁছতেই লেগে গেল পাক্কা দেড় ঘণ্টা।

Advertisement

বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রথম বারের জন্য লাইনের উপর দিয়ে করুণাময়ী অভিমুখে ছুটল।

ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে প্রায় টয় ট্রেনের গতিতে যখন সল্টলেকের রাস্তা, আবাসন ছাড়িয়ে একটু একটু করে প্রায় ৪০ ফুট উঁচু পথে উঠে যাচ্ছে ট্রেন, তত ক্ষণে গোটা সল্টলেক
জেনে গিয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম যাত্রার কথা। অফিসফেরত জনতা থেকে আবাসনের বারান্দায় দাঁড়ানো দম্পতি, প্রায় সকলেই ব্যস্ত ছিলেন প্রথম মেট্রোযাত্রার সেই ঐতিহাসিক ছবি মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করে রাখতে।

Advertisement

মেট্রোকর্তাদের মতোই উত্তেজিত বছর পঁয়ষট্টির চালক দীনদয়ালু। রেলের প্রাক্তন ওই কর্মী এখন বেঙ্গালুরুর ‘ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড’ (বিইএমএল)-এর কর্মী। বছর পাঁচেক আগে রেল থেকে অবসর নিয়ে ওই সংস্থায় যোগ দিয়েছেন। গত পাঁচ বছর ধরে কোথাও নতুন মেট্রো চালু হলেই তাঁর উপরে ভার পড়ে নতুন রেক পরখ করে দেখার।

এ দিন সকাল থেকেই মেট্রোর আধিকারিকদের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। প্রথম ট্রেন প্রথম বার ট্র্যাকে নামবে। স্বাভাবিক ভাবেই উৎকন্ঠায় ছিলেন সকলে। শেষ মুহূর্তে আবার কোনও সমস্যা হবে না তো? গত কয়েক দিন ধরেই একটা আশঙ্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোনও বিপত্তি ছাড়াই গড়ে ২২ কিলোমিটার গতিতে ডিপো থেকে ছেড়ে তিনটি স্টেশন পেরিয়ে সেক্টর ৫-এ পৌঁছল মেট্রো।

যাত্রা শুরুর আগে ব্যাটারিচালিত একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে কারশেড থেকে রেকটিকে বার করে মূল ট্র্যাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে সেই যন্ত্র সরিয়ে নিয়ে চালু হয় ট্রেন। কারশেড থেকে চলতে শুরু করার পরে মাটির উপরের ট্র্যাক পর্যন্ত পৌঁছতে ট্রেনটিকে মোট ১৭টি ক্রসিং পেরোতে হয়। পরীক্ষামূলক দৌড় নিয়ে আশঙ্কায় থাকা আধিকারিকেরা সে সময়ে পরখ করে নিচ্ছিলেন লাইন এবং থার্ড রেল ঠিকমতো আছে কি না। মেট্রো নির্বিঘ্নে সেন্ট্রাল পার্ক স্টেশনে পৌঁছনোর পরে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ট্রেনে ওঠার অনুমতি পান। বাকি পথটুকুতে নিজেদের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি মেট্রোর কর্তারা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রোলিং স্টক এবং ট্র্যাক দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের অন্যতম ডিরেক্টর অনুপকুমার কুন্ডু। গত দু’দশক ধরে সল্টলেকের বাসিন্দা অনুপবাবুর কাছে সল্টলেকে মেট্রো পৌঁছনো তাই আলাদা গুরুত্ব বহন করে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য কী ভাবে মেট্রোর কোচে একের পর এক বদল করা হয়েছে, এ দিন সে কথাই শোনাচ্ছিলেন তিনি।

তাঁর কথায়, “মহিলা যাত্রীদের সুবিধার জন্য তাঁদের আসনের কাছে ছাদ থেকে ঝুলন্ত হাতলগুলি রেকের অন্য প্রান্তের তুলনায় বেশ খানিকটা নিচু করা হয়েছে। কামরার প্রবেশপথে কোথাও কোনও রড রাখা হয়নি।” ফলে নতুন কোচে যাত্রীদের ওঠা-নামা যে অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যের হবে, তা-ও জানিয়েছেন তিনি।

ঘোষিত সময়ের প্রায় এক মাস দেরিতে প্রথম বার মেট্রো চালানো হল এ দিন। কিছুটা দেরি হলেও মেট্রোযাত্রা যাতে নির্বিঘ্ন হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন মেট্রোর আধিকারিকেরা। এর পরে খুব তাড়াতাড়ি অন্য রেকটিকেও পরীক্ষামূলক দৌড়ে নামাতে চান মেট্রোকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন