আবার উড়ালপুল আতঙ্কে শহর। ইএম বাইপাসের একটি উড়ালপুলে বড়সড় ফাটলকে কেন্দ্র করে এই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও উঠে এসেছে ফাটা উড়ালপুলের ছবি। পোস্তায় উড়ালপুল বিপর্যয়ের পর শহরের অন্যান্য উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে আদৌ কি সতর্ক হয়েছে প্রশাসন? এ নিয়ে ফেসবুকে শুরু হয়ে গিয়েছে তুমুল তর্ক। তবে প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও হেলদোল দেখা যায়নি।
চিংড়িঘাড়া উড়ালপুলে বাড়তে থাকা
ফাটল। ছবি: শৌভিক দে।
যে উড়ালপুলে ফাটল ধরেছে, সেটি বাইপাসের অত্যন্ত ব্যস্ত মোড় চিংড়িঘাটায়। ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে চিংড়িঘাটা উড়ালপুল? আমরা দেখতে গিয়েছিলাম সরেজমিনে। আমাদের চিত্রসাংবাদিক শৌভিদ দে যে ছবি তুলে এনেছেন উড়ালপুলটির, তাতে দেখা যাচ্ছে রেলিং থেকে শুরু হয়েছে ফাটল। আড়াআড়ি ফেটে গিয়েছে উড়ালপুলের কংক্রিটের স্ল্যাব তথা রাস্তাও।
এই ফাটল অবশ্য নতুন নয়। চিংড়িঘাটা উড়ালপুলের ওই অংশে ফাটল অনেক দিন ধরেই রয়েছে। তবে ফাটল আগে এতটা চওড়া ছিল না। উড়ালপুলের দু’টি গার্ডার যেখানে পরস্পরের সঙ্গে মেলে, সেই অংশের উপরে স্ল্যাবে এবং রেলিংয়ে ফাটল বা ফাঁক অনেক উড়ালপুলেই থাকে। তাই ওই সুক্ষ্ম ফাটল নিয়ে প্রথমে তেমন হইচই দেখা যায়নি। কিন্তু সম্প্রতি ওই ফাটল চওড়া হতে শুরু করেছে। দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে চিংড়িঘাটা উড়ালপুলের ফাটলটা। তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। মাসদু’য়েক আগেই বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়েছে কলকাতা। সেই ক্ষত শুকনোর আগেই চিংড়িঘাটা উড়ালপুলে ফাটল বাড়তে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা শঙ্কিত। পোস্তার মতো বিপর্যয়ের সাক্ষী হতে হবে না তো? প্রশ্ন চিংড়িঘাটার বাসিন্দা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুন:
বজ্র আঁটুনির দাবি উড়িয়ে মেট্রোয় বিনা টিকিটের যাত্রী
এই প্রশ্নের উত্তরে প্রশাসন কী বলছে? পূর্ত দফতরে যোগাযোগ করে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছ থেকে কোনও জবাব মেলেনি। আমরা ফোন করেছিলাম কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। তিনি বললেন, ‘‘পুরসভা উড়ালপুলের দেখভাল করে না। এটা কেএমডিএ-র বিষয়।’’ কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেও তো কেএমডিএ সদস্য। নিজেই মনে করিয়ে দিলেন সে কথা। দিয়েও বললেন, ‘‘আমি কেএমডিএ সদস্য হলেও এ ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। যা বলার সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমই বলবেন।’’ ফিরহাদ ফোন ধরেননি। তবে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে তাঁর দফতরের এক পদস্থ কর্তার কাছ থেকে। কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, ‘‘চিংড়িঘাটা উড়ালপুলের যে অংশ ফাটল দেখা গিয়েছে, সেটাকে এক্সপ্যানশন জয়েন্ট বলা হয়। এক্সপ্যানশন জয়েন্টে ওই রকম ফাটল স্বাভাবিক। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
কেএমডিএ আশ্বাস দিচ্ছে বটে। কিন্তু আশ্বস্ত নন স্থানীয় বাসিন্দারা। চিংড়িঘাটা উড়ালপুলের ফাটল যেন একটু বেশিই চওড়া। শুধু স্থানীয় মানুষের দাবি নয়, ছবিতেও স্পষ্ট সে কথা।