বিবাদের জেরে ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। সোমবার, টালিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
শুরুটা হয়েছিল বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের ঝগড়া দিয়ে। পরে সেই ঝগড়াই পরিণত হল দুই পাড়ার গোলমালে। যা মেটাতে গিয়ে মার খেলেন দুই পুলিশকর্মী। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা থানা এলাকার টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে।
পুলিশ জানিয়েছে, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে বাবলু সিংহের বাড়ি। সেখানে তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁর বেশ কয়েক ঘর ভাড়াটে রয়েছেন। অভিযোগ, রবিবার দুপুরে বাপ্পা পাসোয়ান নামে এক ভাড়াটেকে নাম ধরে ডেকেছিলেন বাবলুর ছেলে। কেন তাঁকে নাম ধরে ডাকা হল, তা নিয়েই প্রথমে দু’জনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয় বলে অভিযোগ। পরে সেই কথা-কাটাকাটির খবর পৌঁছয় পাশের পাড়া সাহেবমহলে, যেখানে বাপ্পার ছেলেরা থাকেন। অভিযোগ, বিকেলের দিকে টালিগঞ্জ সার্কুলার রো়ডের এক জন সাহেবমহলের দোকানে কিছু কেনাকাটা করতে গেলে সেখানে বাপ্পা পাসোয়ানের ছেলেরা তাঁকে চড়-থাপ্প়ড় মারেন। ওই ঘটনার জেরে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দুই পাড়ার মধ্যে গোলমাল শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, সাহেবমহল থেকে লোকজন নিয়ে এসে বাপ্পার ছেলেরা চড়াও হন বাবলু সিংহ ও তাঁর আশপাশের বাড়িতে। বাবলুর বাড়ির বাইরে রাখা ছিল দু’টি গাড়ি। ভাঙচুর করা হয় সেগুলি। অভিযোগ, এর পরে বাপ্পার ছেলেরা আধলা ইট ছুড়তে শুরু করেন। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে স্থানীয় লোকজন খবর পাঠান থানায়।
এর পরেই বেহালা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু তাতেও দমেননি সাহেবমহলের লোকজন। পুলিশকে লক্ষ করে ছোড়া হতে থাকে আধলা ইট। তাতে দুই পুলিশকর্মী জখম হন। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে বাবলু সিংহ, তাঁর ছেলে, বাপ্পা পাসোয়ান ও তাঁর এক সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। বাপ্পার ছেলেদের অবশ্য ধরা যায়নি।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, টালিগঞ্জ সার্কুলার রো়ডে বাবলু সিংহের বাড়ির বাইরে আধলা ইটের টুকরো পড়ে রয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বাপ্পা পাসোয়ান ও তাঁর পাঁচ ছেলে সব সময়েই কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে গোলমাল বাধিয়ে থাকেন। সারা দিনই মত্ত অবস্থায় থাকেন তাঁরা। শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, এর আগেও বাপ্পা ও তাঁর ছেলেরা সাহেবমহল থেকে লোকজন এনে এই পাড়ায় গোলমাল করেছেন। কিন্তু রবিবার রাতে যা হয়েছে, তাতে বেশ আতঙ্কেই রয়েছেন এলাকার লোকজন।