দোমড়ানো: দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই টোটো। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য জুড়ে টোটোকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছিল বছর দুই আগে। হাওড়াতেও বেআইনি টোটোর বদলে ই-রিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। ঠিক হয়েছিল, প্রথম দফায় পাঁচ হাজার টোটো ভেঙে ই-রিকশা নামানো হবে। কিন্তু, গত এক বছরে ভাঙা হয়েছে মাত্র ২৫টি টোটো। অবৈধ এই যান রমরমিয়ে চলায় দুর্ঘটনাও যে বাড়ছে, শুক্রবার ফের তার প্রমাণ মিলল।
চালকের ভুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোটোর সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগল একটি মিনিবাসের। গুরুতর জখম হলেন টোটোর আরোহী দুই শিশুপড়ুয়া-সহ তাদের মায়েরা। এ দিন ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাঁটরা থানার ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসে। ঘটনার পরেই পালান টোটো ও মিনিবাসের চালক। আহতদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক পড়ুয়া-সহ দুই মহিলার আঘাত গুরুতর।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন মেয়েদের স্কুলে পরীক্ষা শেষে তাদের নিয়ে ফিরছিলেন পম্পা চট্টোপাধ্যায় ও মৌ জয়সওয়াল। তাঁরা যখন ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসে কে-৬ বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি, সে সময়ে টোটোচালক দু’হাত ছেড়ে টুপি পরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। উল্টো দিক থেকে আসছিল টিকিয়াপাড়া-সল্টলেক রুটের একটি মিনিবাস। টোটোটি সোজা গিয়ে তাতে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়ে দু’টি শিশু। শরণ্যা চট্টোপাধ্যায় ও সম্প্রীতি জয়সওয়াল নামে তৃতীয় শ্রেণির ওই দুই ছাত্রীর মাথায় ও কাঁধের হাড়ে চোট লাগে। টোটোর ভিতরে আটকে পড়েন তাদের মায়েরা। স্থানীয়েরাই চার জনকে উদ্ধার করেন।
এ দিন হাসপাতালে বসে ঘটনার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠছিল শরণ্যা। কোনও রকমে সে জানায়, মায়ের সঙ্গে মামার বাড়ি যাওয়ার জন্য চ্যাটার্জিপাড়াগামী টোটোয় উঠেছিল সে। সঙ্গে ছিল সম্প্রীতি ও তার মা। হঠাৎই চালকের মাথায় থাকা টুপি হাওয়ায় খুলে পড়ে যায় গাড়ির ভিতরেই। শরণ্যা বলে, ‘‘টুপিটি আমরা তুলে দিতেই ড্রাইভার কাকু দু’হাত ছেড়ে সেটি পরতে যায়। তখনই বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আমরা ছিটকে পড়ি।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, শরণ্যার মা পম্পাদেবীর পায়ের হাড় ভেঙেছে। সম্প্রীতির মা মৌয়ের ডান পায়ে গুরুতর চোট রয়েছে।
এ দিনের দুর্ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, এত ঢাকঢোল পিটিয়ে টোটো বন্ধের কথা ঘোষণা করা হলেও তা এমন দায়সারা ভাবে করা হল কেন? হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বেআইনি টোটো বন্ধের বিষয়টি দেখছে পরিবহণ দফতর। তারা অনুমতি দিলে আমরা অভিযান শুরু করতে পারি।’’