প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসককে দেখানোর পরে রক্ত পরীক্ষার জন্য কোথায় যেতে হবে, বুঝতে পারছিলেন না প্রৌঢ়া। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ঘোরাঘুরি করার সময়ে অচেনা এক যুবক যেচে সাহায্যের প্রস্তাব দিলে রাজি হয়ে যান বাদুড়িয়ার বাসিন্দা অসীমা কাবাসি। প্রৌঢ়ার আস্থা অর্জন করে ওই যুবকই গয়না ও টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্ত শুরু করেছে বৌবাজার থানা।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। অসীমার দিদির ছেলে, ট্যাংরার বাসিন্দা সন্দীপ মণ্ডল জানান, উচ্চ রক্তচাপের রোগী অসীমা প্রায়ই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শারীরিক পরীক্ষা করাতে আসেন। এ বার শারীরিক পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি কানের সমস্যা হওয়ায় ওই বিভাগের চিকিৎসকের কাছেও যান। অসীমা জানান, রক্ত পরীক্ষা করানোর কথা বলেছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু তার জন্য কোথায় যেতে হবে, বুঝতে পারছিলেন না তিনি।
হাসপাতাল চত্বরে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করেও লাভ হয়নি। এক সময়ে রক্ত পরীক্ষার বিভাগ খুঁজতে খুঁজতে অসীমা এক নম্বর গেটের কাছে চলে আসেন। সেখানেই অচেনা এক ব্যক্তি সাহায্য করার নাম করে তাঁর আস্থা অর্জনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। অসীমার কথায়, ‘‘আমাকে ছেলেটি বলে, সে আমার ভাইয়ের মতো। আমার মতো ওর এক দিদি ছিল। সরল মনে সে সব বিশ্বাস করেছিলাম।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সন্দীপ জানান, তাঁর মাসিকে সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের কাছে এক নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে যায় অভিযুক্ত ব্যক্তি। সেখানে আরও এক জন আসে। অধ্যক্ষের ঘরের ওখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেই কারণে ছাতা খুলে ক্যামেরা আড়াল করে অভিযুক্তেরা। সন্দীপের কথায়, ‘‘মাসিকে ওরা বলে, হাসপাতালে এত গয়না পরে ঘোরা উচিত নয়। সে কথায় বিশ্বাস করে আংটি খুলে ব্যাগে রাখার সময়ে ওরা একটি
লাল রুমাল মাসির মুখের সামনে ঝাড়ে। তাতেই মাসি আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন।’’ প্রৌঢ়া জানান, তাঁর হাতে-পায়ে কোনও বশ ছিল না। নিমেষে তাঁর গয়না ও টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। কিছু ক্ষণ পরে আচ্ছন্ন ভাব কাটতে ব্যাগ খুলে প্রৌঢ়া বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
হাসপাতালের সুপার, চিকিৎসক ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজে আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। প্রৌঢ়ার আস্থা অর্জন করে কাজ হাসিল করা হয়েছে। ঘটনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, অভিযুক্তেরা হাসপাতাল চত্বরটা ভাল ভাবেই চেনে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। রোগীদের সচেতন করতে প্রচার চালানো হবে।’’