Para Teacher

Teachers’ Day: নিয়োগের দাবিতে শিক্ষক দিবসেও পথে হবু শিক্ষকেরা

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে তাঁদের দাবিদাওয়া জানাতে যান শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা বিষয়ে এসএসসি পাশ, ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:২৮
Share:

n বিক্ষুব্ধ: বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষক দিবসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে যাচ্ছিলেন এসএসসি প্যানেলভুক্ত এই চাকরিপ্রার্থীরা। তার আগেই তাঁদের আটক করে লেক টাউন থানা। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

শিক্ষক এবং হবু শিক্ষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে শহরে প্রায় রোজই চলছে বিক্ষোভ-সমাবেশ। তার ব্যতিক্রম হল না রবিবার শিক্ষক দিবসের দিনেও।

Advertisement

এ দিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে তাঁদের দাবিদাওয়া জানাতে যান শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা বিষয়ে এসএসসি পাশ, ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। লেক টাউন থানার পুলিশ সেখানেই তাঁদের আটক করে। এক চাকরিপ্রার্থী জানান, দু’বছর হয়ে গেল তাঁরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করে প্যানেলভুক্ত হয়ে বসে রয়েছেন। নিয়োগের দাবিতে তাঁরা ২০১৯ সালে প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনও করেছিলেন। ওই প্রার্থী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সেই সময়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দ্রুত নিয়োগ হয়ে যাবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাউন্সেলিংই হয়নি আমাদের। আমরা কেন এত দিন বঞ্চিত থাকব?’’

অন্য দিকে, চাকরিতে স্থায়ীকরণ এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিতে এ দিন হাওড়া স্টেশন এবং হাওড়া সেতু চত্বরে বাটি হাতে বিক্ষোভ দেখান ন্যাশনাল স্কিলড কোয়ালিফায়িং ফ্রেমওয়াক (এনএসকিউএফ)-এর বৃত্তিমূলক শিক্ষকেরা। এক শিক্ষক জানান, তাঁরা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সরকার এবং সরকার পোষিত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি বিষয়ে পড়ান। তাঁদের অভিযোগ, কারিগরি বিষয়গুলিতে শিক্ষার গুরুত্ব যেখানে বর্তমানে বাড়ছে, সেখানে তাঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে বাইরের সংস্থার মাধ্যমে। স্থায়ীকরণ তো হচ্ছেই না, উল্টে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, তাঁদের বেতনও খুব কম এবং অনিয়মিত।

Advertisement

দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার দাবিতে এ দিন টুইট কর্মসূচি পালন করলেন উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন চাকরিপ্রার্থীরা। ‘পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ’-এর সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘আট বছর হয়ে গেল, চাকরি প্রক্রিয়া শেষ হল না। অনেকে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষের দাবিতে আমাদের সংগঠনের সাত হাজারের মতো শিক্ষক শিক্ষামন্ত্রীকে টুইট করেছেন।’’

এর পাশাপাশি এ দিন আন্দোলনে শামিল হয় ‘শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ’ও। শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের (এসএসকে) শিক্ষিকারা যাঁরা বিকাশ ভবনের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন, তাঁদের কয়েক জন কালীঘাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এসএসকে শিক্ষকদের দাবিদাওয়া এখনও পূরণ হল না। শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ এবং মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবিতে এ দিন আমাদের সংগঠনের কিছু শিক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু রাস্তা থেকেই পুলিশ তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’’ মইদুল আরও জানান, আত্মহত্যার চেষ্টা করতে যাওয়া তাঁদের সংগঠনের এক শিক্ষিকা এখনও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।

শিক্ষক আন্দোলনের উপরে দমন-পীড়নের অভিযোগে এবং অনৈতিক বাধ্যতামূলক বদলি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে এ দিন কলেজ স্ট্রিটে ত্রিপুরা হিতসাধিনী সভাঘরে এক কনভেনশনের আয়োজন করেছিল ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’। সেখানে অবিলম্বে স্কুল খোলা এবং জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের পক্ষে প্রস্তাব আনা হয়।

শিক্ষকদের দাবিদাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাত্যবাবু বিকাশ ভবনে বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনে আমরা অতিমারি পরিস্থিতিতেও নিয়োগ-প্রক্রিয়া চালু রেখেছি। কারও যদি কোনও অভিযোগ থাকে, তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের গ্রিভান্স সেলে তা জানাতে পারেন। একটা চাকরির পরীক্ষায় সকলে চাকরি পান না। তবু কোনও অভিযোগ থাকলে প্রার্থীরা গ্রিভান্স সেলে যেতে পারেন।’’

ব্রাত্যবাবু আরও জানান, প্রতিটি পদক্ষেপ তাঁরা আদালতকে স্বচ্ছ ভাবে জানাতে চান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কর্মসং স্থানের পরিসর উন্মুক্ত রাখব। তা সত্ত্বেও কেউ যদি কখনও নবান্নে গিয়ে, কখনও আদিগঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে, কখনও বিধানসভার গেটে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে চান, আমরা কী করতে পারি?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন