‘কালীঘাটে গণধর্ষণই’, পুলিশের জালে আরও ১

ধৃতেরা জেরায় এ কথা স্বীকার করেছে। এ দিন ভোরে এই ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্ত, এক নাবালককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

কলকাতা থেকে রাঁচী, হায়দরাবাদ— দেশের নানা প্রান্তে ঘটে চলা ধর্ষণের প্রতিবাদে সরব শহরবাসী। শনিবার বাজে কদমতলা ঘাটে। ছবি: সুমন বল্লভ

কালীঘাটে দুই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে শনিবার বিশেষ পকসো আদালতে দাবি করলেন সরকারি আইনজীবী মাধবী ঘোষ। তিনি জানান, থানায় অভিযোগ দায়েরের পরেই এসএসকেএম হাসপাতালে নাবালিকাদের শারীরিক পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে এই প্রমাণ মিলেছে। তিনি আদালতে বলেন, ‘‘কালীঘাটে দুই নাবালিকার প্রত্যেককে দু’জন করে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু অভিযুক্ত তিন জন। অর্থাৎ এক জন দুই নাবালিকাকেই ধর্ষণ করেছে। ধৃতেরা জেরায় এ কথা স্বীকার করেছে।’’ এ দিন ভোরে এই ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্ত, এক নাবালককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

ধৃত সাবালক গৌর যাদবকে বারুইপুর সংশোধনাগারে রেখে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে হওয়া শুনানিতে মাধবীদেবী এ দিন বলেন, ‘‘শহরে দিনে-দুপুরে এমন গণধর্ষণের ঘটনা নজিরবিহীন। ধৃতদের মধ্যে এক জন সাবালক। দুই নাবালকও জড়িয়ে পড়েছে। এ এক সামাজিক অবক্ষয়ের চেহারা। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাই গৌরকে পূর্ণ সময়ের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর আবেদন জানাচ্ছি।’’

অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমার মক্কেল গৌরকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার মক্কেল ও দুই নাবালিকা পরস্পরের পরিচিত। নাবালিকাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা না-বলেই পুলিশ গণধর্ষণের মিথ্যা মামলা রুজু করেছে। যে কোনও শর্তে আমার মক্কেলকে জামিন দেওয়া হোক।’’ দু’পক্ষের কথা শুনে বিচারক সোনিয়া মজুমদার আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত গৌরকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

দুই নাবালিকার মধ্যে এক জনের মাকে এ দিনও আদালতের বাইরে পুলিশের কাছে তাঁর মেয়েকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ ওকে হোমে রেখেছে। আর হোমে থাকার দরকার নেই। আমি যে কাজ করি তার টাকা আর ওর ভিক্ষা করে আনা টাকায় আমাদের সংসার চলে। মেয়ে না থাকায় সংসার চলছে না।’’ আদালতের বাইরে ছিল ধৃত গৌরের পরিবারও। তার স্ত্রী বলেন, ‘‘আমার স্বামী কালীঘাটে মাংসের দোকানে কাজ করে। যে সময়ে ঘটনা ঘটেছে বলা হচ্ছে, সেই সময় আমার স্বামী দোকানে ছিল।’’

কালীঘাটে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন কালীঘাট থানায় বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি-র যুব শাখা ডিওয়াইও এবং দক্ষিণ কলকাতা বিজেপির সদস্যেরা। বিক্ষোভকারীদের এক জনের কথায়, ‘‘আর কত গণধর্ষণের ঘটনা ঘটলে শহরে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন