শহর থেকে প্রচারের চিহ্ন সরাতে পুর নির্দেশ

শনিবার শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরে দেখা গেল, বড় রাস্তার উপরে এখনও রয়ে গিয়েছে দলীয় প্রার্থীদের পোস্টার, ফ্লেক্স। 

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

ফল প্রকাশের পরেও রয়েছে দেওয়াল লিখন, দলীয় পতাকা। শনিবার, বাইপাসের ধারে পূর্বাচল রোডে। নিজস্ব চিত্র

নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে ঠিক সাত দিন। ফলও বেরিয়ে গিয়েছে। অথচ শহরের রাস্তায় এবং দেওয়ালে এখনও জ্বলজ্বল করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা, ফ্লেক্স, কাট আউট এবং হোর্ডিং। এখনও অনেক দেওয়াল ভরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রচারে। কিন্তু সে সব সরাতে কোনও দলই পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ শহরবাসীর একাংশের। অবশেষে ছবিটা বদলাতে দ্রুত শহর থেকে হোর্ডিং, ফ্লেক্স, কাট আউট সরাতে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

শনিবার শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘুরে দেখা গেল, বড় রাস্তার উপরে এখনও রয়ে গিয়েছে দলীয় প্রার্থীদের পোস্টার, ফ্লেক্স। দক্ষিণের হরিশ মুখার্জি রোড থেকে উত্তরের দমদম স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দেখা মিলল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক কাট আউট। এ ছাড়াও কালীঘাট রোড, প্রতাপাদিত্য রোড, কসবার বোসপুকুর অঞ্চল, কেয়াতলা রোড, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টর সংলগ্ন পূর্বাচল এলাকায় প্রায় সব রাজনৈতিক দলের পতাকার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। উত্তর ও পূর্ব কলকাতাতেও সেই পথ-চিত্রের বিশেষ পরিবর্তন নেই। পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটা, কাঁকুড়গাছির কিছু এলাকা, আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং বড়বাজার চত্বরে ফ্লেক্স, দলীয় পতাকা ও হোর্ডিং রয়েই গিয়েছে।

এক পুর আধিকারিক জানান, প্রতি বারই নির্বাচনের পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ফ্লেক্স-পোস্টার সরানো এবং দেওয়াল লিখন মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কারণ, এ সব সৌন্দর্যায়নে বাধা তো বটেই, পরিবেশের পক্ষেও ক্ষতিকর। পরিবেশবিদদের মত, ফ্লেক্স-কাট আউট যে পদ্ধতিতে তৈরি হয়, তাতে সে সব মাটিতে মিশে যায় না। দীর্ঘদিন ধরে সে সব থাকতে থাকতে ছিঁড়ে পড়ে নিকাশি আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘পরিবেশের কথা ভেবে এ কাজে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’’

Advertisement

ভোটের ফল প্রকাশের পরেই বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের হোর্ডিং, ফ্লেক্স খুলে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে শনিবার জানান পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই সে কাজ শুরু করেছেন। তবে গোটা শহর থেকে সে সব সরাতে আরও কয়েক দিন লাগবে।’’ এ বিষয়ে পুরসভার সঙ্গে সহমত রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের পরেই শহর পরিষ্কার রাখতে এ সব সরানো উচিত। এগুলি যেমন সৌন্দর্যায়ন ব্যাহত করে, তেমনই ছিঁড়ে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা থাকে।’’

রাজনৈতিক স্তরে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে যতই অনৈক্য থাকুক, এ বিষয়ে কিন্তু একমত বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুরসভা নির্দেশিকা মতো কাজ হচ্ছে। দিন কয়েকের মধ্যেই ছড়িয়ে থাকা বিজেপির হোর্ডিং-ফ্লেক্স সরিয়ে দেওয়া হবে। পুর নির্দেশিকা মানার কথা জানাচ্ছেন সিপিএম নেতা চয়ন ভট্টাচার্যও। তাঁর দাবি, ‘‘দলীয় হোর্ডিং-পতাকা প্রভৃতি দু’-এক দিনের মধ্যেই সরানোর পাশাপাশি, দেওয়ালে থেকে বাম প্রার্থীদের প্রচারও মুছে দেওয়া হবে।’’ কংগ্রেস নেতা প্রকাশ উপাধ্যায় জানান, বর্ষার কথা ভেবে ভোটের আগেই পুর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। কিছু জায়গা থেকে সরানো হয়েছে। বাকি যা আছে, তা-ও সরানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন