Kolkata

বাইকে এসে বোমা ছুড়ে চম্পট, ধৃত শূন্য

পাঁচ মাসের মাথায় আবার। গত অক্টোবরে বেলেঘাটার একটি ক্লাবে বোমা বিস্ফোরণের পরে মঙ্গলবার রাতে ফের বোমার আওয়াজে কেঁপে উঠল উত্তর-পূর্ব কলকাতার একটি পাড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ০৭:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি। —ফাইল চিত্র

পাঁচ মাসের মাথায় আবার। গত অক্টোবরে বেলেঘাটার একটি ক্লাবে বোমা বিস্ফোরণের পরে মঙ্গলবার রাতে ফের বোমার আওয়াজে কেঁপে উঠল উত্তর-পূর্ব কলকাতার একটি পাড়া। এ বারের ঘটনাস্থল মানিকতলা মেন রোড। সেখানে সরাসরি এক পক্ষকে লক্ষ্য করে অন্য পক্ষের বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। কারও আঘাত গুরুতর না হলেও ভোটমুখী শহরের পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। লালবাজার থেকে পাঠানো হয় বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াড। বুধবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর, ১১টি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। যদিও কেউই গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

এই ঘটনা নিয়ে পরস্পর-বিরোধী তত্ত্ব উঠে আসতে শুরু করেছে। একটি সূত্রের দাবি, এই ঘটনা দু’টি রাজনৈতিক দলের গোলমালের ফল। অন্য সূত্র এবং পুলিশের আবার দাবি, নির্মাণ সংক্রান্ত ব্যবসায় পুরনো বিবাদের জেরেই এই ঘটনা।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেঙ্গল কেমিক্যালের কাছে মানিকতলা মেন রোডে একটি বহুতলের সামনে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ মানিকতলা থানায় খবর যায়। ওই থানার পাশাপাশি ঘটনাস্থলে যায় ফুলবাগান থানার পুলিশও। একটি সাদা ব্যাগে কিছু পড়ে থাকতে দেখে এলাকা ঘিরে ফেলেন তদন্তকারীরা। মানিকতলা মেন রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়তি পুলিশ পৌঁছয় লালবাজার থেকে। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশের বম্ব স্কোয়াড। ওই ব্যাগে থাকা ১১টি বোমা উদ্ধার করেন তাঁরা। সেগুলিকে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, দু’টি বাইকে চার জন এসে বোমা ছুড়ে পালায়। এক জনকে তাঁরা ধরে ফেললেও পরে সে চম্পট দেয়। এর পরে তিন জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে তদন্তে নামে মানিকতলা থানা।

Advertisement

বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি থমথমে। ঘটনা প্রসঙ্গে কেউই কিছু বলতে চাননি। মানিকতলা মেন রোডের একটি বাজারের পাশেই রয়েছে বাজার কমিটির কার্যালয়। সেটি একটি রাজনৈতিক দলের কাজের জন্যও ব্যবহার হয় বলে স্থানীয়েরা জানান। ওই কার্যালয়ের উল্টো দিকেই রয়েছে একটি বহুতল ও বেলেঘাটার পুরনো একটি ক্লাব। অভিযোগ, ওই বহুতলের সামনে দাঁড়িয়েই বোমা ছোড়া হয় কার্যালয় লক্ষ্য করে। সুদীপ দলুই ওরফে বুলান নামে এক ব্যক্তির দাবি, দিন কয়েক আগে একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের সঙ্গে পোস্টার খোলা নিয়ে বিবাদ হয়েছিল তাঁদের। সেই আক্রোশেই মঙ্গলবার রাতে কয়েক জন এসে কার্যালয় লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে পালিয়েছে। বুলানের কথায়, ‘‘একটি বোমা ফাটলেও আর একটি ফাটেনি। এক জন ছেলে কোনওমতে রক্ষা পেয়েছে। পালানোর সময়ে ওই বাইকবাহিনীর এক জন ধরাও পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু হাত ছাড়িয়ে পালায়। আমরা ওদের চিনি। দত্তাবাদ এলাকায় বাড়ি। তিন জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছি।’’

যদিও মানিকতলা থানার একটি সূত্রের দাবি, বিষয়টি রাজনৈতিক গোলমাল না-ও হতে পারে। একটি নির্মাণ প্রকল্প ঘিরে বুলানের সঙ্গে অভিযুক্তদের গন্ডগোল চলছিলই। মঙ্গলবার রাতে দু’পক্ষে হাতাহাতি হয়। এর পরেই অভিযুক্তেরা এলাকায় ফিরে গিয়ে বাইক নিয়ে এসে হামলা করেছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে না পারা প্রসঙ্গে তদন্তকারীদের দাবি, ‘‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে অভিযুক্তদের ছবি মিলেছে। দ্রুত তারা ধরা পড়বে।’’ যদিও অনেকেই বলছেন, এর আগে বেলেঘাটার ক্লাবে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগের এখনও কোনও কিনারাই হয়নি। বিস্ফোরক রাখার ধারায় মামলা হলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। লালবাজারের তরফে যদিও এ প্রসঙ্গে কোনও উত্তর মেলেনি। পুলিশকর্তারা শুধু জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement