প্রশ্নে পরিকাঠামো

সরকারি হাসপাতালও দেখল তাণ্ডবের ছবি

সকালে মৃতের পরিজনদের আক্রমণে বেহাল হয়েছিল একবালপুরের বেসরকারি হাসপাতাল। আর রাতে এক রোগীর পরিজনদের হাতে নিগৃহীত হলেন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:১২
Share:

সকালে মৃতের পরিজনদের আক্রমণে বেহাল হয়েছিল একবালপুরের বেসরকারি হাসপাতাল। আর রাতে এক রোগীর পরিজনদের হাতে নিগৃহীত হলেন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা ঘিরে বিশৃঙ্খলা এবং অনাস্থার দুই ছবি তৈরি হল বুধবার।

Advertisement

বুধবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে শয্যা না থাকার কারণে এক রোগীকে প্রত্যাখ্যান করায় নিগৃহীত হন কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার। ঘটনার সূত্রপাত রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাওড়ার বাসিন্দা দিলীপ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আসেন তাঁর পরিজনেরা। কিন্তু বেড খালি না থাকায় তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই কর্তব্যরত ডাক্তারদের সঙ্গে তাঁর পরিজনেদের বচসা শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, সায়ন্তন মিত্র নামে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধরও করা হয়। তার পরেই হস্টেল থেকে জুনিয়র ডাক্তার ও মেডিক্যাল পড়ুয়ারা দলে দলে বেরিয়ে আসেন। দু’পক্ষে গোলমাল শুরু হয়। কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার নিগৃহীত হন। অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তাররাও রোগীর পরিজনেদের উপরে চড়াও হন। ভবানীপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাতেই সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তার নিগ্রহের বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সৌম্য মিস্ত্রি নামে এক জন গ্রেফতার হয়েছে।

Advertisement

জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, কিছু প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীর নাম করে তাঁদের হুমকি দেন রোগীর বাড়ির লোকজন। ওই চিকিৎসকদের কথায়, এই ধরনের হামলার কথা একাধিক বার প্রশাসনকে জানিয়েও ফল হয়নি। এক দিকে যেমন শয্যা সংখ্যা বাড়েনি, বাড়েনি রোগী আসার পরে প্রাথমিক ভাবে তাঁকে স্থিতিশীল করে তোলার মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, ঠিক তেমনই উপেক্ষিত থেকেছে ডাক্তারদের নিরাপত্তার বিষয়টি। কর্তৃপক্ষ জানান, নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা চলছে।

কিন্তু পরিকাঠামো? সে বিষয়ে হাসপাতালের তরফে আশ্বাস মেলেনি। তবে জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, এখনও নেতা-মন্ত্রীদের নাম করে বেড বুকিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে বহু সময়ে শয্যা খালি থাকলেও মুমূর্ষু রোগীকে ফিরিয়ে দিতে হয়। বহু জীবনদায়ী ওষুধ-ইঞ্জেকশন মজুত থাকে না। জরুরি বিভাগে একটা ট্রলি পর্যন্ত পাওয়া যায় না। রোগীকে পাঁজাকোলা করে ওয়ার্ডে পৌঁছে দিতে বাধ্য হন পরিজনেরা। এমনকী, এখনও দালালের খপ্পরে পড়ে ঠকছেন বহু রোগী। যত দিন পরিকাঠামোর উন্নতি না হচ্ছে, তত দিন রোগীর পরিবারের ক্ষোভ ঠেকানো যাবে না। আর যেহেতু রোগীরা গোড়াতেই জুনিয়র ডাক্তারদের মুখোমুখি হন, তাই সেই ক্ষোভ তাঁরা উগরে দেন তাঁদের উপরেই। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে তাঁরা ফের আন্দোলনের পথে যাবেন বলেও হুমকি দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন