অক্টোবর মাসে যদি বিধাননগর পুর নিগমের নির্বাচন হয়, তবে আর দেড় মাসও বাকি নেই। ইতিমধ্যেই রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বন্ধকে কেন্দ্র করে নয়া তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজারহাটে তৃণমূলের অন্দরেই। এক শিবিরে রয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসু ও নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। অন্য শিবিরে সিপিএম ছেড়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া তাপস চট্টোপাধ্যায়।
দীর্ঘ দিন বেতন না পাওয়ায় সোমবার ভিআইপি রোড অবরোধ করেন ওই পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, সিপিএমের বোর্ড ভেঙে যাওয়ার পরেই তাঁদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, তখন ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন তাপসবাবু। বর্তমানে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা বিধাননগরের সঙ্গে মিশে গিয়ে নতুন বিধাননগর পুর নিগম তৈরি হয়েছে।
এ দিকে বোর্ড ভেঙে যাওয়ার পরে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভায় যে প্রশাসনিক বোর্ড তৈরি হয়, তাতে ছিলেন পূর্ণেন্দু বসু ও সব্যসাচী দত্ত। পূর্ণেন্দুবাবু এ দিনের পথ অবরোধের কথা শুনে জানান, ওই কর্মীদের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে তাঁদের নিয়োগের কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি সরাসরি তোপ দেগেছেন বর্তমানে তাঁর দলীয় সহকর্মী তাপসবাবুর বিরুদ্ধেই। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘ওই কর্মীদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি। চেয়ারম্যান ইচ্ছে মতো তাঁদের নিয়োগ করেছিলেন। যার জেরে পুরসভার ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা করে অপচয় হয়েছে।’’
আরও এক ধাপ এগিয়ে সব্যসাচীবাবুর মন্তব্য, ‘‘মিথ্যা প্ররোচনা দিয়ে ওই মানুষগুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। যে বা যাঁরা এই কাজ করেছেন তাঁদের এর ফল ভুগতে হবে। ওই ভাবে কাজের ব্যবস্থা না করলে মানুষগুলি রোজগারের বিকল্প আর স্থায়ী উপায় করতে পারতেন।’’
দুই দলীয় ‘সহকর্মী’র বক্তব্যে স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ তাপসবাবু। কৃষিমন্ত্রীর অভিযোগ শুনে পাল্টা তোপ দাগেন তিনিও। তাপসবাবুর কথায়, ‘‘৩০ বছর রাজনীতি করছি। ২৫ বছর পুরসভা চালানোর অভিজ্ঞতা আছে। পূর্ণেন্দুবাবুর থেকে আমি এই কাজে অনেক বেশি অভিজ্ঞ। কোনও বেআইনি নিয়োগ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।’’
সিপিএমে থাকাকালীনই তাপসবাবু পুরসভার ওই কর্মীদের বেতন বন্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। তখন তিনি অভিযোগ করেছিলেন, দক্ষিণ দমদম পুরসভাতেও আড়াই হাজার অস্থায়ী কর্মী কাজ করেন। কিন্তু সেখানে কিছু হয়নি। রাজারহাট-গোপালপুর সিপিএমের পুরসভা বলেই এমন আচরণ করা হচ্ছে। সোমবার সেই প্রসঙ্গ টেনে তাপসবাবু ফের বলেন, ‘‘দক্ষিণ দমদমে তো এমন হয়নি। এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে রোজগার দিতে চাইছেন। অন্য দিকে এখানে তার বিপরীত ঘটনা ঘটছে। আমাকে কারও পছন্দ না হতে পারে। কিন্তু সে জন্য অন্যদের শাস্তি দেওয়া হবে কেন।’’