হকার-রাজ পুর ভবন ঘিরে, নীতি করবে কে

কলকাতা পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবন, পাঁচ নম্বর এস এন ব্যানার্জি রোডের চত্বরে ঢুকলেই দেখা যায়, আশপাশে ঘিরে বসে রয়েছেন হকারেরা। বরাবর এমনই দেখতে অভ্যস্ত মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৭
Share:

অস্বাস্থ্যকর: খাবারের দোকানের দখলে পুর ভবনের পাশের ফুটপাত। এস এন ব্যানার্জি রোডে। নিজস্ব চিত্র

শহর জুড়ে হকার-নীতি রূপায়ণের দায়িত্বে যারা, তাদেরই কেন্দ্রীয় ভবনের সামনে অবাধে হকার-রাজ! হকারেরা কী ভাবে সেখানে বসছেন, তার দায় নিয়ে চাপান-উতোর চলছে একাধিক দফতরের মধ্যে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবন, পাঁচ নম্বর এস এন ব্যানার্জি রোডের চত্বরে ঢুকলেই দেখা যায়, আশপাশে ঘিরে বসে রয়েছেন হকারেরা। বরাবর এমনই দেখতে অভ্যস্ত মানুষ। কিন্তু রাজ্য ও পুর নগরোন্নয়ন দফতরের সাম্প্রতিক নির্দেশের পরে পুর প্রশাসনের অন্দরে ঘুরছে একটি প্রশ্ন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট হকার-নীতি তৈরির কথা হচ্ছে। কলকাতার ক্ষেত্রে যে ভবন থেকে সেই নীতি তৈরি হবে, তার আশপাশেই কী ভাবে হকার-রাজত্ব থাকে?— প্রশ্ন এটাই।

কিন্তু তা দেখার দায়িত্ব কার?

Advertisement

এমনিতে কেন্দ্রীয় পুর ভবন দেখভাল করার দায়িত্ব পুরসভার সিভিল দফতরের। সংশ্লিষ্ট পুরসভার যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ তারাই করে। কিন্তু পুর ভবনের বাইরে কেন হকার বসছে, সে সম্পর্কে তাদের থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি। দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আমরা বিল্ডিংয়ের পরিকাঠামোগত বিষয়গুলি দেখি। ভবনের বাইরে হকার বসার বিষয়টি দেখি না।’’

পুর ভবন চত্বরের কোথায় গাড়ি রাখা হল, কোথাও অসুবিধা হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব পুর সেক্রেটারি দফতরের অধীন কেয়ারটেকার বিভাগের। এমনটাই জানালেন পুর আধিকারিকেরা। যদিও কেয়ারটেকার বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, হকারের বিষয়টি জঞ্জাল অপসারণ দফতর দেখভাল করে থাকে।

এ দিকে জঞ্জাল অপসারণ দফতরের দাবি, এক সময়ে তারা এ বিষয়টি দেখভাল করত। এখন সে দায়িত্ব তাদের নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ‘টাউন ভেন্ডিং কমিটি’ এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। জঞ্জাল অপসারণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এখন কোনও দফতরই বিষয়টি দেখভাল করে না।’’

প্রসঙ্গত, প্রথমে ২০১৪ সালে হকার নীতি তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য। ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হকারদের আইনি বৈধতা দেওয়ার পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো পুরসভাও কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিল। তার পরে কাজ এগোয়নি। এমনকি, তিন বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ‘টাউন ভেন্ডিং কমিটি’ তৈরি হলেও বর্তমানে তার কোনও খোঁজই নেই।

এক পদস্থ পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুর ভবনে ঢোকার মুখেই তো হকারেরা বসেন। সার্বিক নীতি তৈরি করতে গেলে আগে তো এই জায়গা ফাঁকা করতে হবে! সেটা সম্ভব কি?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন