জনশূন্য: বেলা বাড়লেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পাটুিলর ভাসমান বাজার। নিজস্ব চিত্র
ঘটা করে শুরু হয়েছিল বছর দেড়েক আগে। শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল রাজ্যের একমাত্র ভাসমান বাজারটিকে ঘিরে। এ বারের অভিযোগ, বাজারের চলার পথে ছাউনি না থাকায় রোদ-বৃষ্টিতে নাকাল ক্রেতারা, পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পাটুলির ভাসমান বাজারের আনাজপাতি-সহ কাঁচা বাজার। ফলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি পাটুলির ভাসমান বাজারের অস্তিত্বই কার্যত প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
কাঠফাটা রোদ হোক বা বৃষ্টি—নৌকার ধার দিয়ে রোদ ঢুকে প্রায় প্রতিদিন কাঁচা আনাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করছেন পাটুলির ভাসমান বাজারের বিক্রেতারা। চলার পথে ছাউনি না থাকায় ভাসমান বাজারটি থেকে মুখ ঘোরাচ্ছেন ক্রেতারাও।
ব্যবসায়ীদের দাবি, অবিলম্বে বাজারে ছাউনির ব্যবস্থা করা হোক। তাঁদের অভিযোগ, “চড়া রোদে আনাজ তাজা রাখা যাচ্ছে না। সকালে কিনে আনলে বিকেলেই সে সব শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্রেতারা শুকনো আনাজ কিনবেন কেন? তা ছাড়া সকাল ন’টার পর থেকে রোদের তাপ বাড়তে থাকলে বাজার ফাঁকা হতে শুরু করে। সন্ধ্যার পরে হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি হলে ক্রেতাদের ভেজা ছাড়া উপায় থাকে না।” মাছ ব্যবসায়ী সুশীল নায়ার এবং আনাজ বিক্রেতা গোপাল পুরকাইতের কথায়, ‘‘গোটা ভাসমান বাজারেই ছাউনির দরকার। তা হলে লোকজন স্বাভাবিক ভাবে বাজার করতে পারবেন। আমাদের আনাজ-মাছও বাঁচবে। তবেই ভাসমান বাজার টিকবে।’’
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ইএম বাইপাস সম্প্রসারণ করার জন্য বছর কয়েক আগে রাস্তার ধারের ভিআইপি বাজারটিকে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানকার ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতেই পাটুলির ৩২০ মিটার দীর্ঘ এবং ২৫ মিটার প্রস্থের জলাশয়ে ভাসমান বাজারটি তৈরি করা হয়েছে। বিক্রেতাদের কথায়, বাইপাসের ধারের
পুরনো বাজারে দুপুর ১২টাতেও বিক্রি হত। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘এখানে সাড়ে ১০টার পরেই মাছি তাড়ানো ছাড়া আর প্রায় কোনও কাজই থাকে না।’’ রাজ্যের প্রথম ভাসমান বাজারটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই শুধু ক্রেতা নয়, বাজার ঘুরে দেখতে অত্যুৎসাহীদের ভিড়ও লেগেই থাকে। গরমে সেই ভিড়ও প্রায় তলানিতে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
পাটুলির ভাসমান বাজারটি তৈরি করেছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। দেখভালের দায়িত্বও তাদেরই। বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি যে যুক্তিসঙ্গত তা মেনে নিচ্ছেন কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। কেএমডিএ সূত্রের খবর, বাজারে ছাউনির বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। তাঁরা চাইছেন, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক। তাই ভোটের পরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন আধিকারিকেরা।