বর্ষায়ও চলছে কাজ, সমস্যায় বাসিন্দারা

বৃষ্টিতেও বিরাম নেই কাজের। চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। রাস্তায় গভীর গর্ত করা হয়েছিল জলের পাইপ বসাতে। সেই গর্তে ভরে যাওয়া বৃষ্টির জল বের করতে পাম্প চালাতে হয়েছে। জলের স্রোতে গর্তে নেমে গিয়েছে কেটে তোলা মাটি। ফের মাটি সরাতে হয়েছে। এ ভাবেই চলেছে ধাপা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ। সম্প্রতি মাটি চাপা দেওয়ার পরেও উঁচু-নিচু ওই রাস্তায় এখন চলাফেরা দুষ্কর বলে জানাচ্ছেন বাইপাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

এ পথেই নিত্য যাতায়াত। ছবি: শৌভিক দে।

বৃষ্টিতেও বিরাম নেই কাজের। চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। রাস্তায় গভীর গর্ত করা হয়েছিল জলের পাইপ বসাতে। সেই গর্তে ভরে যাওয়া বৃষ্টির জল বের করতে পাম্প চালাতে হয়েছে। জলের স্রোতে গর্তে নেমে গিয়েছে কেটে তোলা মাটি। ফের মাটি সরাতে হয়েছে। এ ভাবেই চলেছে ধাপা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ। সম্প্রতি মাটি চাপা দেওয়ার পরেও উঁচু-নিচু ওই রাস্তায় এখন চলাফেরা দুষ্কর বলে জানাচ্ছেন বাইপাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

পানীয় জলের সমস্যায় জর্জরিত বাসিন্দাদের উন্নতমানের জল পরিষেবা পৌঁছে দিতে ধাপার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ শুরু হয় ২০০৯-এ। জেএনএনইউআরএম-এর অধীন প্রায় ৪০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প। কাজ শেষ হলে রুবি হাসপাতাল, মুকুন্দপুর, অজয়নগর, পাটুলি সংলগ্ন এলাকার কয়েক লাখ বাসিন্দা প্রতি দিন ৩০ মিলিয়ন গ্যালন পরিশোধিত জল পাবেন। এত দিন বিগ ডায়ারের মাধ্যমে মাটির তলার অপরিশোধিত জল পেতেন বাসিন্দারা। ফলে জলস্তর নামলেই শুরু হত প্রবল জলসঙ্কট।

ছিটকালিকাপুরের বাসিন্দা সমতোষ রায় বলেন, “উন্নয়নের কাজের জন্য সমস্যা অবশ্যই মানিয়ে নেব। তবে বর্ষায় কী ভাবে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ হয়! এর ফলে মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজেও সমস্যা হচ্ছে দেখছি।” পূর্বালোকের বাসিন্দা দেবাঞ্জন বসু জানান, জুলাই মাসের প্রথমে বেহাল রাস্তা সাড়াতে খোয়া ফেলে রোলার চালালো। পরের দিনই ফের সেই রাস্তা খোঁড়া হল। তুমুল বৃষ্টিতে প্রায় এক হাঁটু জমা জলের নীচে কোথায় গর্ত বোঝার উপায় নেই। ওই অবস্থায় পাঁচ ছ’দিন যাতায়াত করতে হয়েছে। পুরসভার জল বিভাগ সূত্রে খবর, রিজার্ভারে জল যাওয়ার জন্য আগে ইনপুট পাইপ বসানোর কাজ হয়েছিল। এখন আউটপুট পাইপ বসানোর কাজ হচ্ছে। পরে আবার রাস্তা খোঁড়া হবে বাড়ি বাড়ি সংযোগ দিতে।

Advertisement

স্থানীয়দের দাবি, গভীর গর্ত থেকে বৃষ্টির জমা জল বের করতে পাম্প চালানো হলেও পুরো জল বের করা হয়নি। জলের নীচেই বসানো হচ্ছে পাইপ। প্রশ্ন উঠছে, ধাপা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের মান নিয়েও। কিছু জায়গায় কাজ শেষ হলেও রাস্তা এবড়ো-খেবড়ো অবস্থায়ই রয়ে গিয়েছে। কোথাও গর্ত তো কোথাও মাটির পাহাড়।

স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর রুমকি দাস বলেন, “বর্ষার মধ্যে ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজ হয়েছে। গ্রিন পার্কের সামনে, ছিটকালিকাপুর, মুকুন্দপুর এবং মুকুন্দপুর অটো স্ট্যান্ডের সামনের অবস্থা খুবই খারাপ। কোথাও মাটির ঢিপি, কোথাও গর্ত। অটো উল্টোচ্ছে। রিকশা, সাইকেল গর্তে পড়ে প্রতি দিনই অঘটন ঘটছে। বাসিন্দারা আমাকে প্রশ্ন করছেন। অথচ বর্ষায় কাজ না করতে বারবার পুরসভার কাছে অনুরোধ করেছিলাম।”

পুরসভার জল বিভাগের ডিজি বিভাসকুমার মাইতি বলেন, “সারা বছরে ভোট, উত্‌সব বাদ দিলে কাজ করার মতো হাতে সময় মাত্র ছ’মাস। বৃষ্টির মধ্যে আমাদের কাজ করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। মানুষের যে অসুবিধা হচ্ছে তাও বুঝতে পারছি। কিন্তু এই প্রকল্প শেষ করার চূড়ান্ত সময়সীমা এ বছরের ডিসেম্বর।” কাজের গুণগত মানের প্রশ্নে বিভাসবাবু জানান, জলের নীচে পাইপ বসালে লেভেলিং-এর কোনও সমস্যা হবে না। কারণ, জল বেগে চলে। দফতরের এক আধিকারিক জানান, ইনপুট-আউটপুট পাইপের কাজ কোনও ভাবেই এক সঙ্গে করা যায় না। তাতে রাস্তার পুরোটাই কেটে ফেলতে হবে। তবে বর্ষায় কাজ করার জন্যে খরচ যে কিছু বেড়েছে মানছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন