বর্ষা মানেই বেহাল যশোহর রোড, ফের নিত্যসঙ্গী যানজট

এ যেন গ্রামের মেঠো পথকেও হার মানায়। অথচ এই রাস্তার আড়াই নম্বর গেট দিয়েই সোজা ঢুকে পড়া যায় বিমানবন্দরে। উত্তর শহরতলি থেকে শহরে ঢোকার রাস্তাও এটি। অথচ কঙ্কালসার এই রাস্তাই এখন শহরে ঢোকার আগে পথচারী ও গাড়িচালকদের কাছে কার্যত আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা খারাপ বলে এই এলাকায় যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৭
Share:

খন্দ-চিত্র। নাগেরবাজারের কাছে শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

এ যেন গ্রামের মেঠো পথকেও হার মানায়।

Advertisement

অথচ এই রাস্তার আড়াই নম্বর গেট দিয়েই সোজা ঢুকে পড়া যায় বিমানবন্দরে। উত্তর শহরতলি থেকে শহরে ঢোকার রাস্তাও এটি। অথচ কঙ্কালসার এই রাস্তাই এখন শহরে ঢোকার আগে পথচারী ও গাড়িচালকদের কাছে কার্যত আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা খারাপ বলে এই এলাকায় যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

যশোহর রোডের যে অংশ শহরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তার মধ্যে নাগেরবাজার থেকে বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেট পর্যন্ত রাস্তা কার্যত দুর্গম হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, প্রতি বছরই বর্ষায় যশোহর রোডের এই অংশের হাল খারাপ হয়। তবে এ বার পরিস্থিতি যেন অন্য বারের থেকেও সঙ্গীন।

Advertisement

বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেট থেকে এক নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার পথে বড় বড় গর্ত দেখলে মনে হবে রাস্তাটাই হারিয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও পুরো রাস্তারই পিচ উঠে গিয়ে পাথরের কুচি বেরিয়ে পড়েছে। রাস্তার কিছু অংশে পিচ উঠে যাওয়ায় গাড়ি চলার সময়ে ধুলোর ঝড় উঠছে। পথচারী ও গাড়িচালকেরা জানাচ্ছেন, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয় কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলে। তখন গর্তে জল জমে পুরো রাস্তাটা বিপজ্জনক হয়ে যায়। বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট এলাকার ট্রাফিক গার্ডের এক অফিসার জানান, দু’চাকার গাড়ির পক্ষে এ রাস্তা সবচেয়ে বিপজ্জনক। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাস্তা খারাপ থাকার জন্য এই জায়গায় গাড়ির গতি এতই আস্তে হয়ে যায় যে প্রায়শই যানজটের সমস্যা হচ্ছে। বিশেষত, সকালে অফিসটাইমে এবং বিকেলে অফিসফেরত যাত্রীরা নিত্য যানজটের মধ্যে পড়ে নাকাল হন। মধ্যমগ্রামের এক অফিসযাত্রী বলেন, “বাড়ি ফেরার সময়ে লোকাল ট্রেনে ভিড় এড়াতে বাসে করে ফিরি। কিন্তু এই রাস্তায় যানজটে আটকে অনেকটা সময় নষ্ট হয়।

অন্য দিকে, নাগেরবাজার এলাকায় যশোহর রোডের কিছু অংশ যেন ছোটখাটো ডোবায় পরিণত হয়েছে। এই এলাকা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা এক যাত্রী বলেন, “বিমানবন্দরের এক নম্বর থেকে অটো করে যখন নাগেরবাজার যাই তখন মনে হয় যেন নৌকা করে যাচ্ছি। খানাখন্দতে পড়ে অটোটা এতই দোলে, প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হয়।” নাগেরবাজারে উড়ালপুল থাকা সত্ত্বেও বেশির ভাগ গাড়ি উড়ালপুলের নীচ দিয়ে যশোহর রোড ধরে যাতায়াত করে। এই রাস্তা দিয়ে বড় ট্রাক যাতায়াত করায় বর্ষায় রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

যশোহর রোডের এই অংশটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতর। প্রতি বছর সারানোর পরেও কেন রাস্তা খারাপ হচ্ছে? এর উত্তরে পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, যশোহর রোডের এই জায়গাগুলিতে রাস্তার দুই পাশের নিকাশি ঠিক নেই। ফলে একটু বৃষ্টিতে জল জমে যায়। পিচের ভিতরে জল ঢুকে রাস্তা ভেঙে যায়। রাস্তার হাল স্থায়ী ভাবে ভাল করতে গেলে এই এলাকার নিকাশির হাল ফেরানো দরকার।

রাস্তা দ্রুত সারানোর আশ্বাস দিয়েছেন পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বিমানবন্দর এলাকার যশোহর রোড সারানোর দায়িত্ব আগে ছিল জাতীয় সড়ক কৃষ্ণনগর ডিভিশনের। তবে গত বছর থেকে এই রাস্তা সারানোর দায়িত্ব আমাদের। টানা বর্ষায় কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। বৃষ্টি একটু কমলেই রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হবে। নিকাশির উন্নতির জন্য সংশ্লিষ্ট পুরসভার সঙ্গে কথা বলব।” দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অঞ্জনা রক্ষিত বলেন, “নাগেরবাজার এলাকার যশোহর রোড ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট করা হবে বলে পূর্ত দফতর আমাদের জানিয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন