কালীপুজোয় আলোর রোশনাই। — ফাইল চিত্র।
পুলিশ-প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে গেলেও বাজির তাণ্ডব কমছে না কলকাতা এবং তার আশপাশ এলাকায়। মধ্যরাতেও বিধি ভেঙে দেদার বাজি ফাটছে প্রায় সর্বত্র। একই সঙ্গে বাড়ছে বাতাসে দূষণের মাত্রাও। কলকাতা এবং তার আশপাশ এলাকার গড় একিউআই সন্তোষজনক। কিন্তু রাত ১২ টার পর তাৎক্ষণিক হিসাবে বালিগঞ্জ, বিধাননগর এলাকায় দূষণের সর্বোচ্চ মাত্রা ৪০০-র গণ্ডি পেরিয়ে যায়।
ব্লু লাইনে শহিদ ক্ষুদিরামগামী শেষ মেট্রোয় ঢুকে পড়ল কুকুর। কামরার মধ্যেই ছোটাছুটি শুরু করে সে। বাঁশদ্রোণী স্টেশন থেকে কুকুরটি ঢুকে পড়েছিল। কেন কুকুরটি ঢুকে পড়ল? যাত্রীদের একাংশের দাবি, বাইরে বাজির তাণ্ডব থেকে বাঁচতেই মেট্রোয় আশ্রয় খুঁজতে এসেছিল।
দীপাবলিতে দিল্লির বেশ কয়েকটি এলাকার তুলনায় কলকাতা এবং বিধাননগর এলাকার দূষণের মাত্রা অনেকটাই বেশি। বাতাসের গুণমান সূচকে গড় হিসাব সন্তোষজনক হলেও, ১১টার পর দূষণের মান তাৎক্ষণিক ভাবে অনেকটাই বেশি। কলকাতা, সল্টলেকের একিউআই ৩৫০ ছুঁইছুঁই।
দমদম স্টেশনের আগে এবং পরে লোকাল ট্রেনের কামরা লক্ষ্য করে শব্দবাজি ছুড়ে মারার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। শুধু লোকাল ট্রেন নয়, মেট্রোর কামরা লক্ষ্য করে চকোলেট বোমা ছুড়ে মারার অভিযোগ। বেলগাছিয়া আর দমদম স্টেশনের মাঝে মেট্রোয় এই ঘটনা ঘটেছে। বেলগাছিয়া পেরিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পরে মেট্রো মাটির তলা থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং কংক্রিটের পুলের উপর দিয়ে দমদমে পৌঁছোয়। মেট্রোর ওই পুলের দু’পাশেই ঘন জনবসতি রয়েছে। রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে ওই এলাকায় মেট্রোর কামরা লক্ষ্য করে শব্দবাজি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। একই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব রেলের বনগাঁ লাইনেও। দুর্গানগর এবং বিরাটির মাঝে চলন্ত ট্রেনের কামরা লক্ষ্য করে জোরালো আওয়াজের শব্দবাজি ছোড়া হয়েছে।
শুধু কলকাতা নয়, শব্দবাজির তাণ্ডব চলছে সল্টলেকেও। বাজি পোড়ানো নিয়ে পুলিশের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দিকে দিকে বাজি ফাটছে অনবরত।
রাতের জন্য বেঁধে দেওয়া শব্দের মাপকাঠি ছাড়িয়ে যাচ্ছে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়। শব্দবাজির দৌরাত্ম্যে যে কোনও ভাবেই লাগাম পরানো যাচ্ছে না, তা একপ্রকার স্পষ্ট। সাধারণত, রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত আবাসিক এলাকায় শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেলের মধ্যে থাকা উচিত। আর ‘সাইলেন্স জ়োন’-এ তা ৪০ ডেসিবেল। কিন্তু কালীপুজোর রাতে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় সেই মাত্রা অনেকটাই বেশি। কোথাও কোথাও শব্দের মাত্রা ৮০ ছুঁইছুঁই।
রাত গড়াতেই বালিগঞ্জের বাতাসের মান ধীরে ধীরে ‘বিপজ্জনক’ হচ্ছে। দূষণ ছড়াচ্ছে হু হু করে। চার পাশে শুধু শব্দবাজির তাণ্ডব। প্রশাসনিক বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই বাজি পোড়ানোর যেন প্রতিযোগিতা চলছে। শুধু বালিগঞ্জ নয়, বেলুড়েরও বাতাসের দূষণমাত্রা ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে। গড়ে ‘সন্তোষজনক’ হলেও দুই জায়গাতেই এই মুহূর্তে বাতাসের একিউআই ৩০০ ছাড়িয়েছে।
কালীপুজোয় রাত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাজির দাপট বাড়ছে। কলকাতার দুই জায়গা এবং বেলুড়ের বাতাসের মান ‘মাঝারি’। বাকি জায়গার বাতাসের গুণগত মান ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়েই রয়েছে। কোথায়, কেমন— রইল তালিকা।
গত সোমবার অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর এবং কালীপুজোর দিন অর্থাৎ ২০ অক্টোবর বিকেল ৫টায় বাতাসের গুণগত মানের তুল্যমূল্য হিসাব দেওয়া হল।
সন্ধ্যা ৬টায় কলকাতা এবং তার সংলগ্ন এলাকায় বাতাসের মান কেমন?