প্রতীকী ছবি
হাওড়া পুর এলাকায় ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণ। সেই সঙ্গে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হওয়া (লেভেল ফোর) করোনা রোগীদের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ফলে শহরের কোভিড হাসপাতালগুলিতে ভিড় এতটাই বেড়েছে যে, শয্যা পাওয়াটাই রীতিমতো কঠিন হয়ে গিয়েছে। তাই এ বার শহরের নার্সিংহোমগুলিকে কোভিড হাসপাতাল করার কথা ভাবতে শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
ওই দফতরের কর্তাদের আশঙ্কা, যে হারে শহরে ক্রমশ কোভিড পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী অগস্ট মাসেই কোভিড হাসপাতালে আর জায়গা না-পাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই হাওড়ার সাতটি কোভিড হাসপাতালে শয্যার আকাল শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে এখনই কোভিড হাসপাতাল এবং সেফ হোমের সংখ্যা না বাড়ানো হলে অদূর ভবিষ্যতে গভীর সমস্যা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন ওই কর্তারা।
এর আগে হাওড়া শহরে উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের সংখ্যা বেশি ছিল। ফলে তাঁদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি না করে সেফ হোম বা হোম কোয়রান্টিনে রেখেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু বর্তমানে হাওড়ায়, বিশেষত বয়স্কদের মধ্যে কোভিড এমন ভাবে ছড়িয়েছে যে, যাঁদের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে তাঁদের অনেকেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। আর তাঁদের বেশির ভাগই গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। লেভেল ফোর অর্থাৎ গুরুতর ভাবে অসুস্থ করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে মস্তিস্কে অক্সিজেনের অভাব-সহ উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যার মতো নানা জটিলতা থাকায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতেই হয়। কিন্তু কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা কম হওয়ায় সেখানে রোগীর চাপ বেড়েছে এতটাই যে, রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘শহুরে জীবনযাপনের জন্য হাওড়া পুর এলাকায় লেভেল ফোর করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। নিয়মিত শারীরচর্চার অভাব, কায়িক পরিশ্রম বেশি না থাকায় শরীরে নানা রকম রোগ বাসা বাঁধছে। ফলে তাঁরা সংক্রমিত হলেই গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’’ ওই দফতর সূত্রের খবর, হাওড়ায় মোট সাতটি কোভিড হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৮৫৩টি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে ৬৫০টি শয্যা ভর্তি
হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের যে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে লেভেল ফোর করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে, সেখানেও হাতে-গোনা কিছু শয্যা এখনও খালি রয়েছে। এর মধ্যে হাওড়া হাসপাতালে ও হাওড়া পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এই পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ হলেই রোগীদের সেফ হোম বা কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
সেই কারণেই ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা অবিলম্বে বাড়াতে চাইছে প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এখন কী ভাবে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা করছি। কয়েকটি নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতাল নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কারণ সংক্রমণ যে হারে ছড়াচ্ছে এবং শহরে গুরুতর ভাবে অসুস্থ রোগীদের সংখ্যাও যে ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে অগস্টে পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছবে তা ভেবে আমরা উদ্বিগ্ন।’’