Street Food

পরীক্ষার দৌলতে লক্ষ্মীলাভ সেক্টর ফাইভের দোকানিদের

বেশ কয়েক মাস পরে বুধবার সাহস করে বড় এক হাঁড়ি বিরিয়ানি রান্না করেছিলেন আর এক দোকানি গোলাম মোস্তাফা।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:১০
Share:

বদল: কিছু ক্রেতার দেখা মিলছে দোকানে। বুধবার, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

অনেক দিন পরে যেন ফিরে এল পুরনো জমজমাট চেহারাটা। সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের সৌজন্যে করোনা পরিস্থিতিতেও বিক্রিবাটার মুখ দেখল সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের কয়েকটি ফুটপাতের খাবারের দোকান।

Advertisement

সংক্রমণ এড়াতে সেক্টর ফাইভের বেশির ভাগ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাতেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চলছে। অফিসে আসছেন মুষ্টিমেয় কয়েক জন। তাঁদের বেশির ভাগই আবার বাড়ি থেকে খাবার আনছেন। ফলে রাস্তার খাবার দোকানগুলিতে বিক্রি কার্যত হচ্ছিলই না। দীপঙ্কর নস্কর নামে এক দোকানি জানান, ব্যবসা কম হওয়ায় এখন মাত্র ১০ শতাংশ দোকান খোলা থাকছে সেখানে। কিন্তু গত শনিবার থেকে তাঁদের ভাগ্য যেন কিছুটা হলেও প্রসন্ন হয়েছে। সে দিন হোটেল ম্যানেজমেন্টের প্রবেশিকা পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছিল সেক্টর ফাইভের একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অফিসে। আর মঙ্গলবার থেকে দু’টি শিফটে শুরু হয়েছে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। চলবে ৬ তারিখ পর্যন্ত। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি সেক্টর ফাইভে হওয়ার জন্য সেখানে বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন বহু পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। দীপঙ্করবাবু বলেন, ‘‘ওঁদের মধ্যে অনেকেই আমাদের দোকানে খাবার খাচ্ছেন। আর যাঁরা খাচ্ছেন না, তাঁদের অনেকে দোকানে ব্যাগ বা মোবাইল জমা রাখছেন। সেখান থেকেও কিছু উপার্জন হচ্ছে।’’ এক চায়ের দোকানদার জানান, পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ রাখতে ৩০ টাকা করে নিচ্ছেন তাঁরা। ওই দোকানি বলেন, ‘‘এমনিতে ব্যাগ রাখার জন্য ২০ টাকা রেট। কিন্তু এই পরীক্ষার সময়সীমা বেশি। তাই ৩০ টাকা।’’ খাবার বিক্রির পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ-মোবাইল রেখে গত কয়েক দিনে ভাল উপার্জন হয়েছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

বেশ কয়েক মাস পরে বুধবার সাহস করে বড় এক হাঁড়ি বিরিয়ানি রান্না করেছিলেন আর এক দোকানি গোলাম মোস্তাফা। দুপুর দুটোর মধ্যেই সেই হাঁড়ি প্রায় ফাঁকা। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষার ভিড় দেখে এক হাঁড়ি বিরিয়ানি বানিয়েছি। করোনার আগে এখানে যখন অফিস খোলা থাকত, তখন এক হাঁড়ি বিরিয়ানি বিক্রি হওয়া কঠিন বিষয় ছিল না। কিন্তু এখন আর সেই সুদিন নেই।’’

Advertisement

দূর থেকে পরীক্ষা দিতে যাঁরা এসেছেন, তাঁরাও এই সব দোকান খোলা থাকায় স্বস্তি পেয়েছেন। রাহুল বসু নামে এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘‘সবার পক্ষে তো খাবার বাড়ি থেকে আনা সম্ভব হয়নি। এখানে চা-বিস্কুট, ডিম-টোস্ট গরম গরম পাওয়া যাচ্ছে।’’

কিন্তু পরীক্ষা তো কয়েক দিন পরেই শেষ হয়ে যাবে। তখন কী হবে? কয়েক জন দোকানি জানান, সেক্টর ফাইভে প্রায়ই বিভিন্ন পরীক্ষা হত। তাঁরা আশাবাদী, ফের পরীক্ষা হবে। ফের উপার্জনের মুখ দেখবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন