পাইকপাড়ার দম্পতি খুনে ধৃত মূল অভিযুক্ত

মেয়ে অসুস্থ শুনেও গ্রামের বাড়িতে যায়নি সে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না-পেরোতেই নন্দীগ্রামের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা। ভাত খেয়ে একদফা ঘুম দিয়ে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। বাড়ি ছাড়ার আগে স্ত্রী-র হাতে গুঁজে দিয়েছিল নগদ ৩৫০০ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৫ ১০:২৩
Share:

সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা।

মেয়ে অসুস্থ শুনেও গ্রামের বাড়িতে যায়নি সে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না-পেরোতেই নন্দীগ্রামের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা। ভাত খেয়ে একদফা ঘুম দিয়ে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। বাড়ি ছাড়ার আগে স্ত্রী-র হাতে গুঁজে দিয়েছিল নগদ ৩৫০০ টাকা।

Advertisement

পাইকপাড়ায় ইন্দ্রলোক আবাসনে বৃদ্ধ দম্পতি-খুনের তদন্তে নেমে এমনটাই জেনেছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, বাপ্পা বাড়ি ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পরে নন্দীগ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় একদল পুলিশ। বাপ্পার স্ত্রী পূর্ণিমাকে তারা জানায়, পাইকপাড়ায় দাস দম্পতির খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামীকে খোঁজ করা হচ্ছে। শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পূর্ণিমা। কারণ, ছোটবেলা থেকে ওই দম্পতির কাছেই বড় হয়েছিলেন তিনি। ওই দম্পতিই তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন।

পুলিশ জানাচ্ছে, নন্দীগ্রাম থেকে পালালেও সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছে। শুক্রবার সকালে পাইকপাড়ার বাড়ি থেকেই ধরা হয়েছে তাকে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘সন্ধ্যা পর্যন্ত অপরাধ স্বীকার করেনি বাপ্পা। তবে ওর কথায় অসঙ্গতি রয়েছে।’’ পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকেই বাপ্পার মা-বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। তা শুনেই বাপ্পা কলকাতায় ফিরে আসে। যদিও পুলিশের আর একটি সূত্র জানাচ্ছে, নন্দীগ্রাম থেকে পালানোর পথেই বাপ্পাকে পাকড়াও করা হয়েছে।

Advertisement


নন্দীগ্রামের বাড়িতে পূর্ণিমা।

পুলিশ জেনেছে, ওই দম্পতির কাছ থেকে বাপ্পা ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে শোধ দেয়নি। সম্প্রতি লাখখানেক টাকা ধার চেয়ে ফের জোরাজুরি শুরু করেছিল। তদন্তকারীদের দাবি, এক সময়ে ওই দম্পতি বাপ্পাকে একটি রিকশা কিনে দেন। তাতে চেপে ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা দোকান-বাজার-ব্যাঙ্কে যেতেন। কিন্তু জুয়ায় আসক্ত বাপ্পা সেই রিকশা বিক্রি করে দেয়। বাজারে ধারদেনা হওয়ায় ইদানীং পরিবার নিয়ে ওই ফ্ল্যাটের একটি ঘরেও সে আস্তানা গাড়তে চাইছিল বলে জেনেছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, টাকা-গয়না লুঠের উদ্দেশ্যেই ওই দম্পতিকে খুন করেছে বাপ্পা।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে আলমারি থেকে প্রচুর গয়নার খালি বাক্স উদ্ধার হয়েছে। আবাসনের বাসিন্দারা জানান, রেণুকাদেবী প্রচুর গয়না পরতেন। দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর গায়ে কোনও গয়না মেলেনি। সম্প্রতি ওই দম্পতি ব্যাঙ্ক থেকে বড় পরিমাণ টাকা বাড়িতে এনেছিলেন কি না, তা-ও দেখা হবে। পুলিশ জেনেছে, বুধবারই বাপ্পার সঙ্গে প্রাণগোবিন্দবাবুকে ব্যাঙ্কের দিকে যেতে দেখা যায়। তবে গ্রেফতারের পরেও রাত পর্যন্ত বাপ্পার কাছ থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারেননি গোয়েন্দারা। উদ্ধার হয়নি কোনও অস্ত্রও। আজ, শনিবার বাপ্পাকে আদালতে হাজির করানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন