প্রথম বর্ষের ছাত্রী মোনালিসা গুপ্ত বকখালির সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার পরে অন্য পড়ুয়াদের সচেতন করতে উদ্যোগী আইআইএম কলকাতা। অধিকর্তা শৈবাল চট্টোপাধ্যায় সোমবার জানান, সচেতনতা কর্মসূচির পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। সহপাঠীর অকস্মাৎ মৃত্যুতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত পড়ুয়াদের সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে কথাও বলবেন। যাতে ছাত্রছাত্রীরা কিছুটা জোর পান এবং ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়ানোর ব্যাপারে সচেতন থাকেন।
এ দিন ময়না-তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, সাঁতার না-জানায় ডুবেই মারা গিয়েছেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যায় কেওড়াতলায় লখনউয়ের বাসিন্দা মোনালিসার শেষকৃত্য হয়। সেমেস্টার শেষে গত রবিবার ছয় বন্ধুর সঙ্গে বকখালি যান তিনি। সকালে পৌঁছে সমুদ্রের জল কম থাকায় অন্য এক বন্ধুর সঙ্গে প্রায় আধ কিলোমিটার ভিতরে চলে যান প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী। ইতিমধ্যে জোয়ার আসার কথা মাইকে ঘোষণা করে পুলিশ। সহপাঠীরা জানান, ফেরার সময়ে জলস্তর আচমকা এত বেড়ে যায় যে মোনালিসারা ভেসে যান। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মোনালিসাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তাঁর বন্ধুর চোট লেগেছে।
রবিবার রাতেই বাকিদের জোকায় আনা হয়। ওই ছ’জন এবং মোনালিসার ঘনিষ্ঠ কিছু সহপাঠীকে প্রতিষ্ঠানের মনোবিদ কাউন্সেলিং করছেন বলে অধিকর্তা জানান। তিনি বলেন, “পড়ুয়ারা মর্মাহত। তাই কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ওঁদের পরীক্ষাও করেছেন।” অধিকর্তা জানান, আবাসিক ওই প্রতিষ্ঠান থেকে কোন পড়ুয়া কখন কোথায় যাচ্ছেন, তা লিখে রাখা হয়। তাঁর কথায়, “পড়ুয়ারা প্রাপ্তবয়স্ক, বিচক্ষণ। প্রয়োজনে কোথাও বেরোতেই পারেন। আটকানো উচিত না।”
তবে এই দুর্ঘটনার পরে সচেতনতা কর্মসূচির পরিকল্পনা হচ্ছে বলে জানান অধিকর্তা। তিনি বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা প্রচণ্ড মানসিক চাপে। তাই সময় দিচ্ছি। পরে আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।”
রবিবারই কলকাতায় পৌঁছন মোনালিসার পরিজনেরা। তাঁর দেহ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় সিরিটি শ্মশানে। কিন্তু পরিজনেরা মেয়ের দেহ কাঠের চুল্লিতে পোড়াতে চাওয়ায় বিকেলে কেওড়াতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যায় কেওড়াতলায় পৌঁছে দেখা যায়, থমথমে মুখে বসে মৃতার বাড়ির লোকেরা। আছেন আইআইএম-এর শিক্ষক, কর্মচারী, পড়ুয়ারা। কেউই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। এক ছাত্র বলেন, “আমাদের মনের অবস্থা তো বুঝছেন। এই পরিস্থিতিতে কিছু বলতে পারব না।”