ছিল বিয়ার। হয়ে গেল চিলি প্রন!
পার্ক স্ট্রিটের জনবহুল মোড়ে এক রেস্তরাঁয় বিল পেয়ে এক ব্যক্তির চোখ ছানাবড়া। রীতিমতো অর্ডার দিয়ে নামী সংস্থার বিয়ার খেয়েছেন তিনি ও আরও দুই সঙ্গী। আর বিল যখন দেওয়া হল, তখন দেখা গেল সেখানে বিয়ারের নাম-গন্ধ নেই! তার জায়গায় লেখা রয়েছে চিলি প্রন! যে চিলি প্রন খাওয়া তো দূর, অর্ডার অবধি করেননি ওই ব্যক্তি।এই ‘হ য ব র ল’ দেখে কারণ জানতে চান তিনি। চেপে ধরতে রেস্তরাঁর ম্যানেজার ও কর্মীরা জানান, বিলে বিয়ারের কথা উল্লেখ করা যাবে না। কারণ, মদ বিক্রি বা সরবরাহ করার অনুমতি নেই ওই রেস্তরাঁর।
এর পরেই স্বমূর্তি ধরেন ওই ব্যক্তি। আসলে রাজ্য আবগারি দফতরের তিন আধিকারিক গিয়েছিলেন গ্রাহক সেজে। তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা। তিনিই দলনেত্রী। শনিবার রাতেই ওই রেস্তরাঁর ম্যানেজার ও এক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সিল করে দেওয়া হয়েছে রেস্তরাঁটি।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেক-পেস্ট্রি, কফি-সহ অন্য খাবার বিক্রি করার কথা ওই রেস্তরাঁর। তাদের কাছে সুরা বিক্রির অনুমতি বা লাইসেন্স নেই। তা সত্ত্বেও কেউ চাইলে চড়া দামে মদ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে খবর আসে রাজ্য আবগারি দফতরে। শনিবার রাতে ক্রেতা সেজে সেই রেস্তরাঁয় হানা দেন আবগারি দফতরের আধিকারিকেরা। দেখা যায়, এক বোতল বিয়ারের দাম ৩০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রেস্তরাঁর সামনেই রয়েছে একটি মদের দোকান। রেস্তরাঁয় মদ মজুত করে রাখা হয় না। কিন্তু, কোনও ক্রেতা চাইলে সামনের ওই দোকান থেকে কিনে এনে দেওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে চড়া দামও নেওয়া হচ্ছে।
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, রেস্তরাঁর কর্মী যে স্লিপে গ্রাহকের অর্ডার লিখে নেন, তাকে কিচেন অর্ডার টোকেন (কেওটি) বলে। শনিবার রাতে রেস্তরাঁর বিভিন্ন কর্মীর লেখা পুরনো টোকেন ঘেঁটে দেখা যায়, নিয়মিত বাইরে থেকে মদ কিনে এনে ক্রেতাদের সরবরাহ করা হতো। তার মধ্যে বিয়ার ছাড়াও ভদকা, রাম, হুইস্কি রয়েছে। সে সব টোকেন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আদালতে এ সবই প্রামাণ্য নথি হিসেবে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই রেস্তরাঁর আসল মালিক বিদেশে। এটি আদতে বিদেশি একটি রেস্তরাঁ চেন-এর একটি অংশ।
(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজ জানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)