coronavirus

পুজোয় ভিড় এড়াতে প্রচার ইমামদের

পুলিশ সূত্রের খবর, মেটিয়াবুরুজ থানা এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার তুলনায় কম। এই সাফল্যের পিছনে সেখানকার বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের সদর্থক ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে স্থানীয় থানা।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০২
Share:

সতর্কতা: মেটিয়াবুরুজের একটি মসজিদে ঢুকতে গেলে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা। নিজস্ব চিত্র

ইদ, বকরি ইদ বা মহরমের সময়ে ঘরে থাকতে আবেদন করেছিলেন বন্দর এলাকার বিভিন্ন মসজিদের ইমামেরা। সংক্রমণ এড়াতে ঘরে থেকেই নমাজ পড়ার সেই আবেদনে সে সময়ে বেশ ভাল সাড়া মিলেছিল। এ বার দুর্গাপুজোর সময়েও ভিড় এড়ানোর জন্য মসজিদে মসজিদে প্রচার চালাচ্ছেন ওই ইমামেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মেটিয়াবুরুজ থানা এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার তুলনায় কম। এই সাফল্যের পিছনে সেখানকার বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের সদর্থক ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে স্থানীয় থানা। মেটিয়াবুরুজ থানার ওসি মুকেশ সিংহ বলেন, ‘‘সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মেটিয়াবুরুজের বিভিন্ন ইমামেরা সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে চলেছেন। এটা একটা সদর্থক দিক তো বটেই।’’ তাই ইদ, বকরি ইদ বা মহরমের সময়ে যে ভাবে ঘরে থাকার আবেদন জানিয়েছিলেন ওঁরা, সেই একই পথে হেঁটে এ বার পুজোর সময়েও এলাকার মানুষকে সজাগ হতে বলছেন ইমামেরা। মেটিয়াবুরুজ কাজিরডাঙা জামা মসজিদের ইমাম উমায়ের আহমেদ বোখারি বলেন, ‘‘ইদ, দুর্গাপুজো বাংলার সংস্কৃতির পরম্পরা। এই উৎসব সকলের। এখানে হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ করা একেবারেই অনুচিত। তা ছাড়া ইসলাম তো পরধর্মসহিষ্ণুতা শেখায়। ইদ, বকরি ইদ, মহরমের মতো পুজোর সময়েও যাতে মানুষ ভিড় না জমান, সে বিষয়ে মসজিদে আগতদের সতর্ক করা হচ্ছে।’’
পেশায় শিক্ষক এবং মেটিয়াবুরুজ আহলে হাদিস সংগঠনের (১৪টি মসজিদ নিয়ে গঠিত) সম্পাদক শেখ নাসরুল বারি বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তাই এই সময়ে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। তাই আমাদের এলাকার বিভিন্ন মসজিদের তরফে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নমাজ ছাড়াও প্রত্যেক দিন বিভিন্ন সময়ের নমাজেও ভিড় এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’
মেটিয়াবুরুজ থানা এলাকায় ২৬টি দুর্গাপুজো হয়। পুজোর ক’টা দিন কোনও ভাবেই যাতে ভিড় না হয়, সে বিষয়ে এখন থেকেই মসজিদে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছেন মারি রোডে (ভিআইপি) একটি মসজিদের ইমাম আবদুর রহমান সালাফি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মসজিদে মাস্ক ছাড়া কাউকে নমাজ পড়তে ঢুকতে দেওয়া হয় না। করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা ছাড়াও সরকারি নিয়ম মেনে ২৫ জনের বেশি কোনও জায়গায় জমায়েত করতেও কঠোর ভাবে নিষেধ করা হয়েছে।’’ মেটিয়াবুরুজের মোল্লাপাড়ার জামা মসজিদের ইমাম মহম্মদ মুত্তালিবের কথায়, ‘‘করোনা থেকে বাঁচতে নিজেদেরই সবার আগে সচেতন হতে হবে। শুধু সরকারের পক্ষে এই সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব নয়।’’
মেটিয়াবুরুজ আহলে হাদিস সংগঠনের তরফে শেখ নাসরুল বারি জানিয়েছেন, পুজোর সময়ে এলাকার ভিড় ঠেকানোর পাশাপাশি, সম্প্রীতি বজায় রাখতে এলাকার মুসলিম যুবকেরা স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করবেন। মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে কলকাতা পুলিশের ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ এ ভাবে এগিয়ে এলে পুলিশের কাজটাও সহজ হয়ে যায়।’’

Advertisement

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন