গুলিতে জখম যুবক শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় দমদমের বাসিন্দা অভিজিৎ মল্লিকের। তাঁর মামাশ্বশুর গোপাল বিশ্বাস জানিয়েছেন, এ দিন বিকেলে হাসপাতাল থেকে ফোনে তাঁদের জানানো হয়, অভিজিতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গোপালবাবুরা হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, মারা গিয়েছেন অভিজিৎ।
মঙ্গলবার ভোরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অভিজিৎকে নাগেরবাজারের এক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল তার দুই সঙ্গী চন্দন ও পুচু। তারা জানিয়েছিল, দমদমে সেভেন ট্যাঙ্কসের কাছে দুষ্কৃতীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অভিজিৎ। এর পরেই পালায় তারা। চন্দন ও পুচু প্রথমে দাবি করেছিল, নিউ ব্যারাকপুরের বিটি কলেজের কাছে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অভিজিৎ। রাতেই থানার একটি দল দুই অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। তার পরেই জেরায় তারা জানায়, নিউ ব্যারাকপুরে নয়, মধ্যমগ্রামের বিধান পল্লিতে মদ্যপানের আসরে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করা হয় অভিজিৎকে।
পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চালানোয় মূল অভিযুক্ত হিসেবে বড় পকাই নামে দমদমের এক দুষ্কৃতীর নাম উঠে এসেছে। তার খোঁজ চলছে। ধৃত চন্দন ও পুচুকে বুধবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে এক দিনের জেল হেফাজত দেন বিচারক। সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, ঘটনার তদন্তভার মধ্যমগ্রাম থানার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এক সময়ে অভিজিৎ বড় পকাইয়ের দলে থাকলেও বছরখানেক আগে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে টোটো চালাতে শুরু করেন। অভিজিতের দল ছা়ড়া নিয়ে পকাই ক্ষুব্ধ ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই যুবকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার পিছনে এই আক্রোশই কাজ করেছে। পুলিশের দাবি, জেরায় চন্দন ও পুচু জানিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ পকাই তাদের নিয়ে অভিজিতের বাড়িতে যায়। চন্দন ডেকে পাঠায় অভিজিৎকে। এর পরে চার জন গাড়ি করে যায় মধ্যমগ্রামে পকাইয়ের মামাবাড়িতে। বৃদ্ধ মামা-মামিমাকে ভয় দেখিয়ে পকাই বাড়িতে মদের আসর বসায়। তখনই দল ছাড়া নিয়ে তার সঙ্গে অভিজিতের বচসার শুরু। আচমকাই সঙ্গে থাকা পিস্তল থেকে গুলি চালায় পকাই।
পুলিশ জানিয়েছে, কোন কোন এলাকায় পকাই গা-ঢাকা দিতে পারে, সেই তালিকা তৈরি হয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেট এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের সঙ্গেও কথা বলছেন মধ্যমগ্রাম থানার তদন্তকারীরা।