মন্ত্রী-অফিসারদের কাঁধে বন্দিদের তৈরি উত্তরীয়

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪২
Share:

ফাইল চিত্র।

মন্ত্রী-অফিসারদের গলায় বন্দিদের উত্তরীয়!

Advertisement

শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই ঘটনা। তবে কোনও বন্দি নিজের হাতে মন্ত্রী-অফিসারদের উত্তরীয় পরাননি। মন্ত্রী-অফিসারদের কাঁধে-গলায় থাকা উত্তরীয় তৈরি করেছেন বন্দিরা।

কারা দফতর সূত্রের খবর, আবাসন দফতরের তরফে উত্তরীয়ের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তৎক্ষণাৎ সেই বরাতকে বাস্তবায়িত করতে তৎপর হয় দফতর। দমদম সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষকে উত্তরীয় তৈরির জন্য নির্দেশ দেন কারা দফতরের শীর্ষ কর্তারা। নির্দেশ মতো নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই উত্তরীয় তৈরি শেষ করেন দমদম জেলের বন্দিরা। আবাসন দফতরের থেকে চাওয়া উত্তরীয় তৈরির কাজ করছেন ওই জেলের ছ’জন বন্দি। তাঁরা জেলের অন্দরে কাপড় সংক্রান্ত নানাবিধ সামগ্রী তৈরির সঙ্গে যুক্ত। ওই ছয় বন্দির হাতে আট-ন’রকম নকশার ১০০টি উত্তরীয় তৈরি হয়েছে। যা সম্প্রতি শিলিগুড়িতে আবাসন দফতরের একটি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী-অফিসার-অতিথিদের বরণে ব্যবহার করা হয় বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। উল্লেখ্য, আবাসন দফতর থেকে ১০০টি উত্তরীয়ের বরাত পেয়েছিল কারা দফতর।

Advertisement

রাজ্যের বিভিন্ন সেন্ট্রাল জেলে উৎপাদন ইউনিট রয়েছে। কয়েকটি জেলা জেলেও তা করার চেষ্টা হয়েছে। ওই সব ইউনিটে তৈরি হয় কাঠ, পাটের সামগ্রী। বেকারিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। পাশাপাশি কাপড় ও গামছা দিয়ে বিভিন্ন রকম সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণও পান বন্দিরা। জিন্‌স, স্কুলের পোশাকও তৈরি করেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই সরকারি ক্ষেত্রে একাধিক কাজে ব্যবহৃত হয়েছে পাটজাত সামগ্রীর ব্যাগ, ফাইল, ফোল্ডার। যা বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসাও কুড়িয়েছে। তবে সরকারি কাজে বন্দিদের হাতে তৈরি উত্তরীয়ের ব্যবহারের কথা মনে করতে পারছেন না কারা দফতরের কর্তারা।

কেন এমন উদ্যোগ? কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘একটি দফতর থেকে অন্য দফতরে সামগ্রী সরবরাহ হওয়ায় খরচ অনেকাংশে কম হতে পারে। সেই সঙ্গে সংশোধনাগারের আবাসিকদের বেশি কাজের সুযোগের সঙ্গে ভাল মানের সামগ্রীও পায় সংশ্লিষ্ট দফতর। দামও কিছুটা কম হয়।’’ তবে উত্তরীয় সরকারি কাজে ব্যবহৃত হলেও তার জন্য পৃথক ভাবে বাড়তি পারিশ্রমিক পাবেন না ওই বন্দিরা। সেই অর্থ তাঁরা পাবেন দৈনিক মজুরি হিসেবে।

বন্দিদের কাজের দক্ষতা এমনই যে, তাঁদের হাতেই একদা ঠিক হয়েছিল আলিপুর জেলের গরাদও। কারণ, সেখানকার গরাদ কেটে পালিয়েছিলেন বন্দিরা। তা মেরামত করতে প্রেসিডেন্সি জেলের কয়েক জনকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখন অবশ্য আলিপুর জেলে কোনও বন্দি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন