পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে, তবুও ‘প্রণাম’-এ সদস্য বাড়ানোর নির্দেশ

পরিকাঠামো নিয়ে বার বার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য কলকাতা পুলিশের প্রকল্প ‘প্রণাম’কে। ২০০৯ সালে শুরু এই প্রকল্পের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১১ হাজারেরও বেশি। এ বার সদস্য সংখ্যা এক লক্ষ করার নির্দেশ দিলেন নগরপাল সুরজিত্‌ করপুরকায়স্থ।

Advertisement

দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০০:১৮
Share:

অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, নগরপাল সুরজিত্‌ করপুরকায়স্থ ও চিকিত্‌সক মহম্মদ সইফুদ্দিন কাদরি। ছবি: রণজিত্‌ নন্দী।

পরিকাঠামো নিয়ে বার বার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য কলকাতা পুলিশের প্রকল্প ‘প্রণাম’কে। ২০০৯ সালে শুরু এই প্রকল্পের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১১ হাজারেরও বেশি। এ বার সদস্য সংখ্যা এক লক্ষ করার নির্দেশ দিলেন নগরপাল সুরজিত্‌ করপুরকায়স্থ।

Advertisement

এই নির্দেশ শুনে চমকে উঠছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তাদের কয়েক জন। তাঁরা জানাচ্ছেন, ১১ হাজার সদস্য সামালাতেই হিমশিম খাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। এক লক্ষ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সামলাবে কী ভাবে? এঁদের নিয়ে পরম যত্নের সঙ্গে কাজ করতে হয়। প্রাক্তন পুলিশকর্তা অনিল জানা বলেন, “রাজ্যে কিছু না ভেবেই একটা কাজ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাতে মুখ পুড়ছে পুলিশের।”

সম্প্রতি আলিপুরে বডিগার্ড লাইনের পুলিশ অডিটোরিয়ামে ‘প্রণাম’-এর অনুষ্ঠানে নগরপাল সুরজিত্‌ করপুরকায়স্থ বলেন, “প্রণাম প্রকল্পের সদস্য সংখ্যা এক লক্ষ করতে হবে। স্বেচ্ছায় কাজের জন্য বয়স্ক নাগরিকদেরই এগিয়ে আসতে হবে।” অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রণামের মতো ভালো কাজ শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে জেলাতেও করতে হবে।” অথচ তার পরিকাঠামো কী ভাবে উন্নত হবে তা নিয়ে কোনও কথা বলেননি মন্ত্রী এবং নগরপাল।

Advertisement

নগরপালের এই নির্দেশের প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ লালবাজারের অনেক কর্তাই মুচকি হাসছেন। লালবাজার সূত্রের খবর, ছ’বছরের বেশি সময় ধরে চলছে শহরে একলা থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সহায়তার জন্যে ‘প্রণাম’। এখনও প্রকল্পের পরিকাঠামোয় যথেষ্ট খামতি রয়ে গিয়েছে বলে লালবাজারের একাধিক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে শহরের বিভিন্ন থানায় প্রণামের দায়িত্বে থাকা এক জন ওসি, এক জন এএসআই এবং তিন জন হোম গার্ডের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। ছিলেন প্রণামের বর্ষীয়ান সদস্য ১১৩ বছরের ইউনানি চিকিত্‌সক মহম্মদ সইফুদ্দিন কাদরি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা অরিন্দম শীলও।

সব শুনে রাজ্যের আরও এক প্রাক্তন পুলিশকর্তা গৌতমমোহন চক্রবর্তী বলেন, “প্রণাম খুব ভালো প্রকল্প। পুলিশ যদি এক জন নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার পাশে থাকে তার চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। তবে এই সব ‘ভালো’ কাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তার পরিকাঠামো। সেই দিকটাও নজর দেওয়া জরুরি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন