Kolkata Book Fair

নেট-দুনিয়া থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বইমেলা

বিধাননগরের পুর কমিশনার দেবাশিস ঘোষও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

সামান্য একটি ই-মেল পাঠানোর চক্করে তখন বেশ বিরক্ত রাশিয়ার সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক সরকারি কর্তাটি। কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার রাশিয়ার প্যাভিলিয়নে সদ্য তাঁর বক্তৃতা শেষ করে সেই সংক্রান্ত একটি জরুরি বার্তা কাউকে পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু, ঢিলেঢালা নেট সংযোগে ই-মেল তার গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সল্টলেকে বইমেলার মাঠে নেট-সংযোগের এমনই গোলমেলে পরিস্থিতি। শুক্রবার মেলার তৃতীয় দিনেও শুধরোয়নি পরিস্থিতি। বইমেলা শুরুর পরেও অনেক প্রকাশকেরই বই সংক্রান্ত কিছু না কিছু কাজ লেগে আছে স্মার্টফোন মারফত। কম-বেশি সবারই ভোগান্তি এখনও অটুট।

Advertisement

অতএব প্রশ্ন উঠছে এত দিন ধরে বইমেলার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতি নিয়েই। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মেলায় ইন্টারনেট সংযোগ মসৃণ রাখতে বিধাননগরের পুরকর্তা, বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার সঙ্গে বারবার বৈঠক হয়েছে। গত বছরও নেট নিয়ে ছোটখাটো সমস্যা হয়েছিল।’’ প্রকাশক, বই কারবারিদের অভিজ্ঞতা কিন্তু অন্য। স্বয়ং গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলছেন, ‘‘আমাদের প্রকাশনীর দোকানেই কার্ডে লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে।’’ প্রতি বছর মেলায় নেটের গোলমালে কার্ড-বিভ্রাট দেখে এ বার সেই পাটই রাখেননি প্রকাশক সৌরভ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকেও ভুগতে হচ্ছে। সৌরভ বলেন,

‘‘বইমেলায় ঢুকলেই দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন। বিকেল ৪টেয় একটা বইয়ের প্রচ্ছদ চূড়ান্ত করার কথা ছিল। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপই অকেজো। কাজ মিটল মেলার মাঠের ত্রিসীমানা ছাড়িয়ে রাত ১০টার পরে।’’

Advertisement

বইমেলায় লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের জানলা ‘ইন্দো-হিস্প্যানিক সোসাইটি’র কর্ণধার দিব্যজ্যোতি মুখোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা, ‘‘ভোডাফোনের সমস্যা তুলনায় কম। কিন্তু জিও, এয়ারটেল ও বাকিদের ভালই ভুগতে হচ্ছে। মাঠের কয়েকটি এলাকায় নেট মিললেও কোথায় মিলবে, কোথায় মিলবে না— তা অনেকেই ঠাহর করতে

পারছেন না।’’

কেন এই অবস্থা?

বিধাননগরের পুর কমিশনার দেবাশিস ঘোষও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি জানিয়েছেন, মেলায় বিএসএনএল, ভোডাফোন, এয়ারটেলের বক্স রয়েছে। কেউ কেউ স্টলও দিয়েছেন। মেলার মাঠের পাশেই করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে জিও-র টাওয়ার। ‘‘তবু কেন সমস্যা হচ্ছে জানতে অভিযোগ পেয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাচ্ছি। আশা করি, সমস্যা মিটবে।’’— বলছেন তিনি।

আর এক প্রকাশক মাহরুফ হোসেনের কথায়, ‘‘সপ্তাহের অন্য দিনগুলিতে মেলায় কার্ডে লেনদেন চললেও শনি-রবির ভিড়ে সব মুখ থুবড়ে পড়ে। নেট-সংযোগের কী হাল তা বোঝার আগেই দেখছি, লক্ষণ

ভাল নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন