হাসপাতালের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সূত্রের খবর, শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশ আসার পরেই তড়িঘড়ি শুরু হয়েছে তদন্ত।
সুপারিন্টেন্ডেন্ট শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। কার বা কাদের গাফিলতিতে এমনটা হল, তা সকলের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার করার চেষ্টা চলছে। সবটা জানা গেলে রিপোর্ট দেবে কমিটি। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ তপন লাহিড়ী বলেন, ‘‘অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন এমন হল, তা খতিয়ে দেখে, সব নথি জোগাড় করে স্বাস্থ্য দফতরকে জমা দেব নির্দিষ্ট সময়ে।’’
বুধবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬২ বছরের এক প্রৌঢ় জীবন দাসের মৃত্যুর পরে অভিযোগ উঠেছিল, পাঁচ ঘণ্টা ধরে কার্যত চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয়েছিল আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা জীবনবাবুকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন তাঁর ছেলে প্রদীপ দাস।
প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে ভর্তির কথা লিখে দেওয়ার পরেও হৃদ্রোগ বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয়নি রোগীকে। তাঁর অভিযোগ, ডাক্তার এক বার রোগীকে দেখেননি পর্যন্ত। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রের পাল্টা যুক্তি, ইমার্জেন্সিতে ন্যূনতম চিকিৎসাটুকু করিয়েই তাঁকে মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়েছিল ভর্তির জন্য। ওঁরা হৃদ্রোগ বিভাগে গিয়ে ঠিক করেননি।
প্রশ্ন উঠেছে, তা-ই যদি হবে, তা হলে হৃদ্রোগ বিভাগ থেকে সঙ্গে সঙ্গে ওঁদের পাঠানো হল না কেন মেডিসিনে? কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সে বিষয়টি বিস্তারিত জানার জন্যই তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে।
মৃত জীবনবাবুর জামাই রাজা ঘোষের দাবি, ইমার্জেন্সিতে মেডিসিন বিভাগে ভর্তির কথা লিখে দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। সেই মতো তিনি টিকিটও করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরে ইমার্জেন্সিতে ফিরে দেখেন সেখানে অন্য চিকিৎসক।
তাঁর অভিযোগ, ওই চিকিৎসক ফের বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি, এখনই ভর্তি করতে হবে না।’’
এ কথা বলে অক্সিজেন ও নেবুলাইজারের ব্যবস্থা করে জীবনবাবুকে বক্ষ বিভাগে রেফার করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। তাঁদের দাবি, সেখানে গিয়েই বিনা চিকিৎসায় অনেক ক্ষণ সময় কাটার পরে মারা যান জীবনবাবু। স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীকে ফোন করলে ‘‘ব্যস্ত আছি’’, বলে জানান তিনি।