‘ঐতিহ্যের ইজারা হয় না’

তালতলার বেকার হস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি সরিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছিল সংখ্যালঘুদের একটি সংগঠন। সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, ‘‘ঐতিহ্যের কোনও ইজারা হয় না। বঙ্গবন্ধু দুই বাংলার কাছেই শ্রদ্ধেয়, স্মরণীয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের প্রেরণা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

বঙ্গবন্ধুর সেই মূর্তি

তালতলার বেকার হস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি সরিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছিল সংখ্যালঘুদের একটি সংগঠন। সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, ‘‘ঐতিহ্যের কোনও ইজারা হয় না। বঙ্গবন্ধু দুই বাংলার কাছেই শ্রদ্ধেয়, স্মরণীয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের প্রেরণা। তাঁর স্মৃতি শ্রদ্ধার সঙ্গে সংরক্ষণ করাই আমাদের কর্তব্য। এর কোনও রকম বিরোধিতাকে বরদাস্ত করা হবে না। কেউ প্রতিরোধ তৈরি করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

সংখ্যালঘুদের ওই সংগঠন, ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর তরফে বলা হয়েছে, ‘‘ইসলাম ধর্মে মূর্তির স্বীকৃতি নেই। বেকার হস্টেলের ভিতরে মসজিদ রয়েছে। তাই হস্টেলের মধ্যে কোনও ইসলাম-বিরোধী কাঠামো গড়া অন্যায়।’’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘অবিলম্বে ওই মূর্তি হস্টেল থেকে সরিয়ে কলকাতার যে কোনও সরকারি জায়গায় বসানো হোক।’’

আজ থেকে ৭২ বছর আগে কলকাতার ওই বেকার হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ইসলামিয়া কলেজে (অধুনা মৌলানা আজাদ কলেজ) আইন নিয়ে পড়ার সময়ে দু’বছর (১৯৪৫-’৪৬) বেকার হস্টেলে দোতলার ২৪ নম্বর ঘরে থাকতেন মুজিব। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে বেকার হস্টেলে মুজিবের ব্যবহার করা ২৪ নম্বর ও পাশের ২৩ নম্বর ঘর মিলিয়ে সংগ্রহশালা গড়তে উদ্যোগী হন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। ১৯৯৮ সালের ৩১ জুলাই ওই সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন তৎকালীন উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তী। সংগ্রহশালায় মুজিবের ব্যবহার করা বিছানা, চেয়ার, টেবিল, তাক সংরক্ষিত করা হয়েছে। পরে ২০১১ সালে ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি ওই সংগ্রহশালায় মুজিবের একটি মূর্তির উন্মোচন করে যান।

Advertisement

কামরুজ্জামান এ দিন বলেন, ‘‘হস্টেলের সংগ্রহশালায় বঙ্গবন্ধুর মূর্তি যে রয়েছে, তা আমাদের জানা ছিল না। গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে তাঁর মূর্তিতে মালা দিতে আসেন সিপিএম নেতা বিমান বসু। তখনই আমরা মূর্তির বিষয়টি জানতে পারলাম।’’ হস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি সরানোর দাবি জানিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে সংগঠনের তরফে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি জেনে বলতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন