হাওড়া

জাপানের কনসাল যাচাই করবেন শিল্পের পরিবেশ

বেলুড়ে প্রস্তাবিত শিল্পতীর্থের জন্য নির্দিষ্ট করা জমি এ বার নিজে ঘুরে দেখতে চান কলকাতায় জাপানের কনসাল জেনারেল মাসুইকি তাগা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

বেলুড়ে প্রস্তাবিত শিল্পতীর্থের জন্য নির্দিষ্ট করা জমি এ বার নিজে ঘুরে দেখতে চান কলকাতায় জাপানের কনসাল জেনারেল মাসুইকি তাগা। মঙ্গলবার কলকাতায় জাপান কনস্যুলেটে তাঁর সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী ও পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই কনসাল জেনারেল প্রস্তাবিত শিল্পতীর্থের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা বেলুড়ের নিস্কো কারখানা এবং লিলুয়া পিঁজরাপোলের জমি ঘুরে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ঠিক হয়েছে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি সেই পরিদর্শন হবে।

Advertisement

পরে রথীনবাবু বলেন, ‘‘হাওড়ায় শিল্পাঞ্চল তৈরিতে জাপান বিনিয়োগ করতে উৎসাহী। তাই বারবার সেখানকার প্রতিনিধিরা জমি পরিদর্শন করতে আসছেন। এ বার কনসাল জেনারেল নিজে সব ঘুরে দেখবেন।’’ তিনি জানান, কনসাল জেনারেল জাপানে সবিস্তার রিপোর্ট পাঠানোর পরেই প্রকল্পে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়বে। পাশাপাশি মেয়রের দাবি, জাপান ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশের বড় শিল্প সংস্থা ইতিমধ্যেই হাওড়ায় সমীক্ষা চালিয়েছে। তারাও শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। রথীনবাবু জানান, বৈঠকে কনসাল জেনারেল জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিক মতো চললে শুধু ইয়াকোহামা নয়, সেখানকার বড় তিন-চারটি সংস্থাকেও হাওড়ায় শিল্পে বিনিয়োগ করার জন্য বলা হবে।

মেয়র জানান, সম্প্রতি মিলন মেলায় বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে হাওড়ায় শিল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে জাপানের কনসাল জেনারেলের সঙ্গে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তা থেকেই জাপান সরকার হাওড়ায় বিনিয়োগে আরও উৎসাহী হয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার বৈঠকের পরে মাসুইকি জানান, বছর দেড়েক আগে তাঁদের যে প্রতিনিধিরা জমি পরিদর্শন করেছেন তাঁরা হাওড়ায় শিল্পাঞ্চল তৈরিতে অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতির কথাই রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে এ বার নিজের চোখে পুরো বিষয়টি দেখতে চান তিনি।

হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, বেলুড়ে বন্ধ নিস্কো কারখানার প্রায় ১৩৫ একর এবং লিলুয়া পিঁজরাপোল সোসাইটির প্রায় ২৫০ একর জমিতে পরিকাঠামোগত কী কী সুবিধা আছে এবং আরও কী সুবিধা দেওয়া সম্ভব, সে সম্পর্কে ছবি ও তথ্য সম্বলিত বই তৈরি করা হবে। সেটি দেখেই শিল্পতীর্থ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাবেন কনসাল জেনারেল। বেলুড় ও লিলুয়ার ওই জমি থেকে খুব সহজেই জি টি রোড, ৬ নম্বর ও ২ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যে সংযোগকারী রাস্তা বানানো সম্ভব। ফলে শিল্পাঞ্চল তৈরি হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকেও যে কোনও সমস্যা থাকবে না, সেটিই জানানো হবে জাপানি প্রতিনিধিদের। রথীনবাবু বলেন, ‘‘হাওড়ায় শিল্পঞ্চল তৈরি হলে প্রযুক্তিবিদ এবং দক্ষ শ্রমিকেরা কেউ ভিন্‌ দেশে চলে যাবেন না। তাঁদের মতো অনেক বেকার যুবকেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’’

কনসাল জেনারেলের এই সফর নিয়েই এখন তৎপর হাওড়া পুরসভা। মেয়রের দাবি, ‘‘রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক— কোনও দিক থেকেই হাওড়ায় শিল্পাঞ্চল তৈরিতে অসুবিধা নেই। তবে পুরো বিষয়টি কনসাল জেনারেলের সামনে ঠিক মতো উপস্থাপন করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’ তাই আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি যে পথ দিয়ে কনসাল জেনারেল পুরসভায় আসবেন এবং বেলুড় শিল্পতীর্থের জমি পরিদর্শনে যাবেন, সেগুলি সাজিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন