কলকাতা বিমানবন্দরে আবার সমস্যায় জিজা

জিজার অভিযোগ, ‘‘আমার হুইলচেয়ার লাগে। কিন্তু এ দিন গো এয়ারের কাউন্টারে গিয়ে হুইলচেয়ারের জন্য ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:১১
Share:

জিজা ঘোষ।—ফাইল চিত্র।

তিনি নিজে সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত। বিশ্ব জুড়ে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করার সূত্রে বিদেশেও একাই যাতায়াত করেন।

Advertisement

রবিবার দুপুরে কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে সেই জিজা ঘোষকেই ফের কলকাতা বিমানবন্দরে সমস্যায় পড়তে হল। জিজার অভিযোগ, ‘‘আমার হুইলচেয়ার লাগে। কিন্তু এ দিন গো এয়ারের কাউন্টারে গিয়ে হুইলচেয়ারের জন্য ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।’’ তাঁর দাবি, তাঁকে জানানো হয়েছিল ব্যক্তিগত সঙ্গী ছাড়া একা বিমানে উঠতে দেওয়া হবে না।

এর আগে ২০১২ সালে কলকাতা থেকে গোয়া যাওয়ার সময়ে একটি উড়ান সংস্থা জিজাকে তাঁর প্রতিবন্ধকতার কারণে বিমানে উঠতে দেয়নি। সেই মামলা আদালতে ওঠে এবং ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট কড়া ভাষায় ওই উড়ান সংস্থার সমালোচনা করে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সে বার বিচারপতিরা জানিয়েছিলেন, এ ভাবে এক জন সেরিব্রাল পলসি আক্রান্তের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না।

Advertisement

অন্য দেশের মতোই প্রতিবন্ধীদের সব সুযোগসুবিধা দেওয়ার কথা আন্তর্জাতিক সনদে সাক্ষর করে ভারতও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। সেই বিষয়েই বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে আজ, সোমবার দিল্লিতে সম্মেলন রয়েছে। তাতেই যোগ দিতে যাচ্ছিলেন জিজা। এ দিন জিজার সঙ্গে দিল্লি যাচ্ছিলেন সমাজকর্মী রত্নাবলী রায়, কুহু দাস এবং শম্পা সেনগুপ্তও।

রত্নাবলী জানান, ‘‘উড়ান সংস্থার যে মহিলা কর্মী জিজাকে একা উঠতে দেওয়া যাবে না বলে জানান, তিনি পরে ক্ষমা চেয়ে যান। এর পরে গো এয়ারের এক জন ম্যানেজারও এসে ক্ষমা চেয়ে নেন। কথা বলে বুঝলাম, এই ধরনের যাত্রীদের সঙ্গে কী ভাবে ব্যবহার করা উচিত তার প্রশিক্ষণই নেই ওই মহিলার।’’ কলকাতা বিমানবন্দর থেকেই পুরো ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান তিনি। গো এয়ার সংস্থা জানায়, ‘‘ওই যাত্রী (জিজা) আগে থেকে হুইলচেয়ার বুক করেননি। বিমানবন্দরে এসে যখন চান, তত ক্ষণে তিনটি হুইল চেয়ারই অন্যদের দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিছু ক্ষণের মধ্যে একটি হুইলচেয়ার ব্যবস্থা করিয়ে তাঁকে দেওয়া হয়। তাই তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে বলায় আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’’

রত্নাবলী জানান, সহযাত্রী কুহুর পোলিয়ো থাকায় তাঁর পা-কে সাহায্য করতে ধাতব পাত রয়েছে। একে ‘ক্যালিপার’ বলে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এ দিন শারীরিক তল্লাশির সময়ে কুহুকে সেই পা খুলতে বলা হয়।’’ কুহু বলেন, ‘‘আমি দেশ-বিদেশের বহু বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেছি। ক্যালিপারে ধাতব বস্তু থাকায় মেটাল ডিটেক্টরে আওয়াজ হয় ঠিকই। কিন্তু সর্বত্রই বাইরে থেকে লিটমাস পরীক্ষা করে ওঁরা আমাকে ছেড়ে দেন। এর আগেও কলকাতা বিমানবন্দরে আমাকে এ ভাবে ক্যালিপার খুলতে বলা হয়েছিল।’’ তবে এ দিন সেই ধাতব পা খোলেননি কুহু।

কুহুর বিষয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যাত্রীর কোনও ধরনের অসুবিধা হোক এটা আমরা চাই না। পাশাপাশি

নিরাপত্তার দিকটিও গুরুত্বপূর্ণ। দেখতে হবে ঠিক কী ঘটেছিল এবং ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের সমস্যা না হয় তা-ও দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন