ভুয়ো ফোন করে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধির পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের ঠকিয়ে টাকা হাতানোর ঘটনা ঘটেই চলেছে। সম্প্রতি এমনই একটি এটিএম জালিয়াতির অভিযোগের তদন্তে নেমে সল্টলেক পুলিশ এ বার ঝাড়খণ্ডের একটি গ্যাং এর সন্ধান পেল।
ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে এক কলেজ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে সল্টলেক সাইবার থানার পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জয় মণ্ডল ওরফে করন কুমার ওরফে রাহুল। ধৃতকে শুক্রবার বিধাননগর আদালতে তোলা হলে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। ধৃতের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ও ৬টি সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে নিউটাউনের বাসিন্দা এক মহিলা সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, সেপ্টেম্বর মাসে এক ব্যক্তি একটি অজানা নম্বর থেকে তাঁকে ফোন করেছিলেন। সেই ব্যক্তি নিজেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি মহিলার এটিএম কার্ডের বিভিন্ন তথ্য বলে বিশ্বাস অর্জন করে। সেই সূত্রেই মহিলার এটিএম কার্ডের পাসওয়ার্ড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেয় সেই ব্যক্তি। তার কিছু দিনের মধ্যেই মহিলা দেখেন তাঁর ৩১ হাজার টাকা হাতানো হয়েছে।
তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন ঝাড়খণ্ড থেকে মহিলাকে ফোন করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই সঞ্জয়ের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। ধৃত সঞ্জয় ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র বলে জানায় পুলিশ। যদিও তার বাড়ি বর্ধমানের হীরাপুরে।
সল্টলেকের গোয়েন্দা প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানান, শুধু একজন নয়, ঝাড়খণ্ডের একটি গ্যাং ঘটনার পিছনে রয়েছে। তাঁদের খোঁজেও তল্লাশি শুরু হয়েছে। এই চক্রটি আরও কতগুলি ঘটনা ঘটিয়েছে, সে সম্পর্কে ধৃতের কাছ থেকে তথ্য মিলতে পারে।
তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, শহর ও শহরতলিতে সাইবার অপরাধের একাধিক চক্র সক্রিয় রয়েছে, তার মধ্যে ভিন রাজ্যের গ্যাং এর সংখ্যাও যে বাড়ছে, এই ধরণের ঘটনায় আরও একবার তার প্রমাণ মিলছে।
এই প্রসঙ্গে সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাঙ্ক কখনই ফোনে তথ্য সংগ্রহ করে না। তা জানা সত্ত্বেও গ্রাহকদের একাংশ ফোনে তথ্য দিয়ে ফেলছেন। বস্তুত এই ধরণের সাইবার অপরাধ দমনে লাগাতার ভাবে গ্রাহকদের সচেতন করাই একমাত্র রাস্তা।